Coronavirus

করোনা আক্রান্ত নিখোঁজ

গ্রামীণ চিকিৎসক জানান, সপরিবার ফের বিশাখাপত্তনম গিয়েছে কিশোরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর ও চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৩:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুদূর বিশাখাপত্তনম থেকে খড়্গপুরে এসে করোনা পরীক্ষা। রিপোর্ট পজ়িটিভ আসতেই শুরু হল খোঁজখবর। কোথায় গেল করোনা আক্রান্ত কিশোরী।!

Advertisement

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে দেওয়া ছিল কিশোরীর ঠিকানা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সেখানে থাকে না কিশোরী বা তার পরিবার। সেটি রেলশহরের এক গ্রামীণ চিকিৎসকের বাড়ি। ওই চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত কিশোরীর বন্ধু। করোনা আক্রান্ত রোগী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় জবাবদিহি করতে হচ্ছে খরিদার বিধানপল্লির বাসিন্দা ওই গ্রামীণ চিকিৎসককেই। হাসপাতালে তাঁরই ফোন নম্বর দিয়েছিল ওই কিশোরীর পরিবার। কোথায় গেল ওই কিশোরী? গ্রামীণ চিকিৎসক জানান, সপরিবার ফের বিশাখাপত্তনম গিয়েছে কিশোরী।

গ্রামীণ চিকিৎসক জানিয়েছেন, ৩০ বছর আগে ওই পরিবার বিশাখাপত্তনম চলে যায়। যোগাযোগ ছিল ফোনে। ওই কিশোরীর বাবা দিন কয়েক আগে সপরিবারে খড়গপুরে আসেন। যোগাযোগ করেন বন্ধুর সঙ্গে। জানান, তাঁর মেয়ের একটি সংশাপত্র প্রয়োজন। সেখানে লিখে দিতে হবে কিশোরী করোনা মুক্ত। ওই গ্রামীণ চিকিৎসক বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে শহরে এসে ঝক্কি এড়াতে আমার পরামর্শ চাইছিল। ওরা চাইছিল, আমি একটি শংসাপত্র লিখে দিই। ওদের সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করাতে বলি। প্রথমে থামার্ল স্ক্যানিং হবে ভেবেছিল। কিন্তু যখন দেখেছে নমুনা দিতে হল তখন আমার নজর এড়িয়ে ওরা শহর ছাড়ে। পরে বালেশ্বর পেরিয়ে জানায় ফের বিশাখাপত্তনাম যাচ্ছে।” পেশায় আসবাব ব্যবসায়ী ওই কিশোরীর বাবার মোবাইল এখন সুইচড অফ।

Advertisement

জেলায় এভাবে নমুনা দিয়ে বেপাত্তা হওয়ার ঘটনা বিরল। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “এমন ঘটনা সত্যিই আমাদের আগে কখনও হয়নি। বিশাখাপত্তনম থেকে এসে নমুনা দিয়েছিল ওই কিশোরী। এখন দেখছি ঠিকানা ও ফোন নম্বর এক গ্রামীণ চিকিৎসকের। ওই পরিবার নমুনা দিয়েই চলে গিয়েছে। এতে আমাদের এক পজ়িটিভের সংখ্যা বেড়ে গেল।”

স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ মনে করছেন, ঠিকানা ও ফোন নম্বর যাচাইয়ের অভাবের জেরেই ঘটেছে এই ঘটনা। তবে করোনা পরীক্ষার জন্য যে ফর্ম পূরণ করতে হয় তাতে আধার কার্ডের বিস্তারিত দেওয়ার জায়গা থাকলেও তা অনেকেই দিচ্ছেন না। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা ঠিক যে ফর্মে আধার কার্ডের বিস্তারিত দেওয়ার জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেটি বাধ্যতামূলক না হওয়ায় আধারের বিস্তারিত ছাড়াই অধিকাংশ সময়ে আমাদের নমুনা নিতে হচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনা আমাদের শিক্ষা দিল।”

পরীক্ষার সময় তথ্য যাচাইয়ে হাসপাতালের গাফিলতি চোখে পড়লেও সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গিয়েছে চন্দ্রকোনা রোডে। বুধবার ছিল পূর্ণ লকডাউন। ওই দিন রাত ৯ টা থেকে চন্দ্রকোনা রোডের বিদ্যাসাগর মঞ্চে সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বসেছিল জরুরি সভা। ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা জেলাপরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, সিএমওএইচ নিমাইচন্দ্র মণ্ডল, ডেপুটি সিএমওএইচ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি, বিএমওএইচ দীপক কুইল্য। এছাড়া সভায় ছিলেন ব্লক, পুলিশ ও স্বাস্থ্যদফতরের প্রতিনিধিরা। সভায় ডাকা হয়েছিল চন্দ্রকোনা রোডের ক্লাব, ব্যবসায়ী, বাজার সংগঠনের প্রতিনিধিদের। সভার আগে বিদ্যাসাগর মঞ্চ জীবাণুমুক্ত করা হয়। দূরত্ব বিধি মেনে সভা চলে ঘন্টাখানেক। সেখানেই সিএমওএইচ সহ স্বাস্থ্যদফতরের প্রতিনিধিরা সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে করোনা বিধি মানার আবেদন করেন।

চন্দ্রকোনা রোডে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত নতুন করে সংক্রমণের খবর আসেনি। তবে ১৩ জনের রিপোর্ট অমীমাংসিত আসায় সেগুলি ফের পরীক্ষা করা হবে। গড়বেতা ১ ব্লকের আমলাগোড়া অঞ্চলের পায়রাউড়ার এক যুবকের অমীমাংসিত রিপোর্ট আসার পর ফের পরীক্ষায় বুধবার রাতে রিপোর্ট আসে পজিটিভ। রাতেই তাঁকে শালবনির করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে ব্লক স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement