প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রেলশহরে। চিকিৎসা পরিষেবা সচল রাখা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। কারণ খড়্গপুর শহরে একের পর এক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন।
শুক্রবার রাতের রিপোর্টে রেল হাসপাতালের এক প্রবীণ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, এক নার্স ও এক স্বাস্থ্যকর্মী-সহ শহরের ১৭ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তারপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রেল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগ। ওই বিভাগের রোগী ও বহু স্বাস্থ্যকর্মীকে গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে। এর আগেও রেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের একজন প্রবীণ চিকিৎসক ও বহু নার্স, কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতেও রেল হাসপাতালের এক চিকিৎসকের স্বামীর রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। তিনি আবার চক্ষু বিশেষজ্ঞ। করোনায় রেল হাসপাতালের এক অবসরপ্রাপ্ত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের মৃত্যুও হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর
হাসপাতাল মোট খালি
শয্যা শয্যা
খড়্গপুর ৫০ ১৮
হাসপাতাল
আয়ুষ করোনা ৮০ ০
হাসপাতাল
শালবনি সুপার ২০০ ৫৪
স্পেশালিটি
ডেবরা সেফ ৪০ ৩
হোম
ঝাড়গ্রাম
ঝাড়গ্রাম নাইট ৭৫ ৬৭ শেল্টার
(শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে)
রেল হাসপাতালের সংক্রমিত ওই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, “একই হাসপাতালে কোভিড ও সাধারণ বিভাগ চলতে থাকায় রোগীরা মিলেমিশে যাচ্ছে। তাছাড়া অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় নেগেটিভ এলেও আরটিপিসিআরে রোগী অনেক ক্ষেত্রে পজ়িটিভ হচ্ছেন। কিন্তু জরুরি ক্ষেত্রে সময় বেশি না থাকায় রোগীকে বহির্বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতেই হচ্ছে। এ সবের জেরেই চিকিৎসকেরা সংক্রমিত হচ্ছেন।’’ অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল মানছেন, “সবসময় তো নিয়ম মেনে চিকিৎসার কাজ সম্ভব হচ্ছে না। উপসর্গ বুঝে অবজারভেশন ওয়ার্ডে রেখে পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু জরুরি ক্ষেত্রে উপসর্গ না থাকলে রোগী সরাসরি ওয়ার্ডে চলে যাচ্ছে। এতেই বিপত্তি বাড়ছে।”
শুক্রবার রাতের রিপোর্টে ওই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ-সহ শহরের যে ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা মূলত সুভাষপল্লি, ভবানীপুর, নিউ সেটলমেন্ট, বড় আয়মা, দেবলপুর, সোনামুখি, কুমোড়পাড়া, রবীন্দ্রপল্লি, আরামবাটি এলাকার বাসিন্দা। এমন ঘটনায় ক্রমেই কমছে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা। এমনকি দিন কয়েক আগে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে যে সেফ হোম আইসোলেশন চালু হয়েছে তাতেও শয্যা সঙ্কট দেখা দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “আক্রান্তের সংখ্যা এভাবে বাড়লে শয্যা সঙ্কট দেখা দেবেই। আমরা যেমন শয্যা বাড়াতে নতুন নতুন সেফ হোম খোলার চেষ্টা করছি তেমনই হোম আইসোলেশন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর
আক্রান্ত ২,৯২৯
রোগমুক্ত ১,৯১০
করোনায় মৃত্যু ২৯
সক্রিয় করোনা রোগী ৯৯০
শেষ আক্রান্তের খোঁজ ২১ অগস্ট
ঝাড়গ্রাম
আক্রান্ত ১৭৭
রোগমুক্ত ১২১
করোনায় মৃত্যু ২
সক্রিয় করোনা রোগী ৫৪
শেষ আক্রান্তের খোঁজ ২১ অগস্ট
সূত্র: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শনিবারের বুলেটিন
শুধু খড়্গপুর শহর নয়, মহকুমা জুড়েই সঙ্কটময় পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। শুক্রবার রাতের রিপোর্ট অনুযায়ী খড়্গপুর মহকুমায় মোট ৭৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তারমধ্যে খড়্গপুর-১ ব্লকের ১৪ জন আছেন। দাঁতনে ২৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়াও সবংয়ের ৭ জন, দাঁতন-২ ব্লকের ৪ জন, কেশিয়াড়ির ৩ জন, মোহনপুরের ২ জন ও বেলদায় ১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)