প্রতীকী চিত্র।
সংক্রমণ বেশি শহরাঞ্চলে। কিন্তু মৃত্যুর হারে এগিয়ে গ্রামাঞ্চল। করোনার এমনই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, জেলায় সার্বিকভাবে এখন মৃত্যুর হার ২.০৭ শতাংশ। মেদিনীপুর, খড়্গপুরের মতো শহরে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শহরগুলিতে মৃত্যুর হার কোথাও ২ শতাংশের কিছুটা বেশি, কোথাও আবার ১ শতাংশেরও কম। বরং সবং, ঘাটাল, খড়্গপুর গ্রামীণ, চন্দ্রকোনা রোডের মতো গ্রামাঞ্চলে মৃত্যুর হার বেশি। কোথাও ৪ শতাংশ, কোথাও আবার ৪ শতাংশেরও বেশি।
বিষয়টি উদ্বেগের ঠেকছে অনেকের কাছেই। অবশ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলছেন, "সার্বিকভাবে জেলায় মৃত্যুর হার কমই। এ নিয়ে অহেতুক উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীও বলেন, ‘‘উদ্বেগের কিছু নেই। সার্বিক পরিস্থিতির উপরে নজর রয়েছে।’’ কিন্তু কেন গ্রামাঞ্চলে মৃত্যুর হার বেশি? জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের ব্যাখ্যা, দেখা গিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে এমন কারও কারও মৃত্যু হয়েছে, যাঁরা অনেক দেরিতে হাসপাতালে এসেছেন। শুরুতে শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। যখন মনে করেছেন হাসপাতালে যেতে হবে, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
২১ অগস্ট পর্যন্ত জেলায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২,৪২১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। মৃত্যুর হার ২.০৭ শতাংশ। অন্যদিকে, সুস্থতার হার ৫৪.০৭ শতাংশ। জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রে খবর, জেলার ২১টি ব্লকের মধ্যে ১২টি ব্লকেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জেলার ৭টি শহরের মধ্যে ৪টি শহরেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই সূত্রে খবর, চন্দ্রকোনা রোডে ৭৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। খড়্গপুর গ্রামীণে ২৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক জনের। দাসপুরে ৫২৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত ১৫ জন। ঘাটালে ১২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। সবংয়ে ৬৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৩ জন। ডেবরায় ৮১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। পিংলায় ৪৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
তুলনায় শহরে মৃত্যুর হার কম। খড়্গপুর শহরে ২৬২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। মেদিনীপুর শহরে ২৬৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। ঘাটাল শহরে ৯৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছেএক জনের। চন্দ্রকোনা শহরে ২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। ২ জনই সেরে উঠেছেন। কারও মৃত্যু হয়নি। রামজীবনপুর শহরেও ২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। ২ জনই সেরে উঠেছেন। ক্ষীরপাই শহরে ২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এক জন সেরে উঠেছেন, অন্য জন চিকিৎসাধীন।
জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘লাগাতার করোনা পরীক্ষার জন্যই একদিকে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে এবং মৃত্যুর হার কমছে। মৃত্যুর হার আরও কমানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ ২১ অগস্ট পর্যন্ত জেলায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রে খবর, ২৬ অগস্ট সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৬১। অর্থাৎ, পাঁচদিনে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘ওই ৬১ জন করোনা সংক্রমিত ছিলেন ঠিকই। তবে এঁদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে কো-মর্বিডিটিতে। এঁদের অন্য রোগ ছিল।’’