প্রতীকী ছবি
জেলায় দিন দিন পরিযায়ী শ্রমিকদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে আসছে। নতুন করে আরও চারজন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কিন্তু পাশাপাশি অভিযোগও উঠেছে, লালারসের নমুনা সংগ্রহের পরে অনেক দেরি করে আসছে রিপোর্ট। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিভৃতাবাসের ১৪ দিনের মেয়াদ কাটিয়ে নিভৃতবাস কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার পরে আসছে রিপোর্ট। ফলে ততক্ষণে আক্রান্তের সংস্পর্শে আরও একাধিক ব্যক্তি চলে আসছেন বলে দাবি। যদিও দেরিতে রিপোর্ট আসার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল।
মহারাষ্ট্র এবং গুজরাত ফেরত ভগবানপুর-১ ব্লকের মহম্মদপুরে পশ্চিমবাড় এবং সিমুলিয়া এলাকার দু’জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিমবাড় এলাকায় আক্রান্ত বৃদ্ধ গত ২১ মে বাড়ি ফিরে কেলেঘাই নদীর ধারে একটি বাড়িতে নিভৃতাবাসে ছিলেন। গত ২৭ মে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই রিপোর্ট এসেছে ৩ জুন সন্ধ্যায়। তাতে জানা যায়, ওই ব্যক্তি করোনা পজ়িটিভ। এ দিকে ওই ব্যক্তির ১৪ দিনের নিভৃতাবাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বুধবার দুপুরে তিনি বাড়ি ফেরার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন পরে রিপোর্ট আসছে কেন? ওই ব্যক্তি যদি বাড়ি চলে যেতেন, তা হলে তো তিনি অন্যদেরও সংক্রমিত করতে পারতেন। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য দফতর থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সম্প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেরিতে রিপোর্ট পাওয়ার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। নিতাই বলেন, ‘‘নমুনা পাঠানো পর এখন এক-দু’দিনের মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। দেরিতে রিপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। আমাদের জেলায় ২ জুন পর্যন্ত পাঠানো নমুনার রিপোর্ট চলে এসেছে।’’ পাশাপাশি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর এখন আগের চেয়ে ল্যাবরেটরির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই দ্রুত
রিপোর্টও আসছে।
ভগবানপুর-১ ব্লকের ওই দু’জন ছাড়া শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের দুই শ্রমিকের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গিয়েছে। এঁদের মধ্যে খারুই-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বছর সাঁইত্রিশের এক বাসিন্দা মুম্বই থেকে ফিরেছিলেন। সোমবার তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। বুধবার রাতে তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। অন্য দিকে ওই ব্লকেরই বুড়ারি বাজার সংলগ্ন এলাকার আরও এক যুবক মুম্বই থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। করোনার উপসর্গ থাকায় তাঁকে চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার রাতে তাঁর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে।
চার আক্রান্তকেই পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার মেচগ্রামের ওই হাসপাতালে নতুন করে ১৮ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। বর্তমানে বড়মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৩ জন করোনা আক্রান্ত। হাসপাতালের টেকনিক্যাল অফিসার দেবোপম হাজরা বলেন, ‘‘নতুন করে ১৮ জন বড়মায় ভর্তি হয়েছেন। মোট ৭৩ জন আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে।’’