গত বছর বিশ্বকর্মা পুজোয় আলোকসজ্জা। এ বার এমন ছবি দেখা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে হলদিয়াবাসী। ফাইল চিত্র
বিশ্বকর্মা পুজো এখনও প্রায় আড়াই মাস বাকি। অন্য বছর এই সময় থেকেই কার্যত পুজোর নানা পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় শিল্পশহর হলদিয়ায়। কিন্তু এ বার বিধি বাম। একে করোনা পরিস্থিতি। তার উপর লকডাউনের কারণে অনেকেরই কর্মসংস্থান নেই। ফলে বিশ্বকর্মা আরাধনার প্রস্তুতি নিয়ে সংশয়ে পুজোর উদ্যোক্তারা। শিল্পশহরে এটাই এখন চর্চার বিষয়।
দুর্গাপুজোর চেয়ে হলদিয়ায় বিশ্বকর্মা পুজোর ধুমধাম বেশি হয়। ছোট-বড় মিলিয়ে আড়াইশো থেকে তিনশো পুজো হয় এই শিল্পশহরে। যেহেতু কাজের দেবতা হিসেবে পুজো করা হয় বিশ্বকর্মার, তাই সমস্ত কলকারাখনা, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিশ্বকর্মা পুজো হয়। পুজোর বাজেটও কোথাও কোথাও লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এ বার পুজোর কী ভাবে করা যাবে তা নিয়ে উদ্যোক্তারা চিন্তিত।
লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে কল-কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়া ফের শুরু হয়েছে। কিন্তু লক ডাউন শিথিল হওয়ায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই অবস্থায় সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতেই হবে। আগের মতো পুজোর সমারোহে জনসমাগম আর সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন কী ভাবে সম্ভব হবে তা ভেবে পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বিশ্বকর্মা পুজোর সময় শিল্পসংস্থাগুলো প্রতিবছর সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে একাধিক জনসেবামূলক কাজকর্ম করে থাকে। প্রতিদিনই নানাবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে গিয়ে এ সব কর্মসূচি বাতিল করতে হবে। হলদিয়ার বাসিন্দা যাদব পাল বলেন, ‘‘সারা বছর এই কটা দিনের জন্য তাকিয়ে থাকি। আত্মীয়-স্বজনরা বিশ্বকর্মা পুজোয় বাড়িতে আসে। দিনগুলো খুব মজায় কাটে। কিন্তু এ বছর আর সে সব সম্ভব নয়। ফলে খারাপ তো লাগছেই।
হলদিয়ায় তৃণমূলের শ্রমিকনেতা শিবনাথ সরকার বলেন, ‘‘নমো নমো করে হয়তো পুজো সারা হবে। কোনওরকম জাঁকজমকের প্রশ্নই ওঠে না। শিল্প সংস্থাগুলিকে এ বিষয়ে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে করোনা রুখতে গেলে কিছু নিয়ম আমাদের মানতেই হবে।’’
হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেডের তৃণমূলের ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘এবছর বিশ্বকর্মা পুজো ধুমধাম করে করা যাবে না। ছোট এক চালার মণ্ডপ তৈরি করে পুজো করা হবে। সরকারি নির্দেশিকা ও সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই পুজো হবে। স্বাভাবিক ভাবেই আগের মতো জৌলুস হবে না এ বছর।’’