সুনসান রাস্তাঘাট। সোমবার পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারে। নিজস্ব চিত্র
মাঝে একদিনের ব্যবধান। তাতেই বদলে গিয়েছে পাঁশকুড়ার বাজার এবং রাস্তাঘাটের ছবিটা।
লকডাউনেও পাঁশকুড়া শহর এবং ব্লক এলাকায় ভিড় এবং জমায়েতের অভিযোগ উঠেছিল। প্রশাসনিক পদক্ষেপের পরেও সেই পরিস্থিতি পাল্টায়নি। শনিবার পাঁশকুড়া শহরের এক প্রৌঢ়ার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। এর পরে রাতারাতি বদলে গিয়েছে পাঁশকুড়ার ছবি। সুনসান রাস্তাঘাট। বাজারে নেই আগের মতো জটলা। ‘দুয়ারে শমন’ বুঝতে পেরে ঘরবন্দি জনতা।
কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন পাশকুড়া পুর এলেকার এক প্রৌঢ়া। ওই খবর জানজানি হওয়ার পরেই নিয়ম ভাঙার ছবিটা একেবারেই দেখা যাচ্ছে গত এক দিন ধরে। সোমবার সকাল থেকেই পাঁশকুড়া শহরে পুরাতন বাজার এবং স্টেশন বাজার এলাকা ছিল সুনসান। ব্লকের অধিকাংশ এলাকাতেই একেই ছবি। মাঝে মধ্যে পুলিশের টহল ছাড়া অন্য কোনও যানবাহন এদিন সেভাবে নজরে আসেনি।
করোনা আতঙ্কে পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারের পাইকারি আনাজ বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফল বাজারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পাঁশকুড়া কৃষক বাজারে। এতদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যান্য প্রান্ত থেকে করোনা আক্রান্তের খবর এলেও পাঁশকুড়া শহরে আক্রান্ত না হওযায়, এ বিষয়ে কোনও হেলদোল ছিল না ব্যবসায়ীদের একাংশরেও। করোনা মানচিত্রে পাঁশকুড়া শহরে নাম জুড়ে যাওয়ায় মানুষজন নিজে থেকেই অনেকখানি সাবধানী। পাঁশকুড়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘শহরের একাংশ মানুষ লকডাউন মানছিলেন না। এখন সবাই ভয়ে ঘরবন্দি।’’
পাঁশকুড়ার ওই আক্রান্ত প্রৌঢ়ার সংস্পর্শে আসা আরও চারজনকে এ দিন পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের আইসোলেশনে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পাঁশকুড়া ব্লকের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক শচীন্দ্রনাথ রজক বলেন, ‘‘ওই প্রৌঢ়ার প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসা মোট ১৩ জনকে আইসোলেশনে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রত্যেকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করছি আগামী কাল পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেয়ে যাব।’’
অন্যদিকে, হলদিয়াতেও নতুন করে চারজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ওই চারজনের সংস্পর্শে আসা ৭৫ জনকে হলদিয়া এবং চণ্ডীপুরের নিভৃতবাসে (কোয়রান্টিনে) পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের সকলেরই লালারসের নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। তবে প্রত্যেকের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে স্বাসত্য দফতর সূত্রের খবর। ওই ব্যক্তিদের নিভৃতবাস কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে আপাতত ১৪ দিনের জন্য গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।