হলদিয়ার ব্রজলালচকে পুলিশের প্রচার। নিজস্ব চিত্র
এক দিনে তিন করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এতেই নড়েচড়ে বসেছে খেজুরি-১ ব্লক প্রশাসন। সংক্রমণ ঠেকাতে খেজুরির সবচেয়ে জনবহুল হেঁড়িয়া এবং উদাখালী বাজার একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই খোলার নির্দেশ দিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রবিবার খেজুরি-১ এলাকায় তিন করোনা আক্রান্তের হদিস পাওয়া গিয়েছে। এঁদের মধ্যে দুজন কর্মসূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকতেন। ওই এলাকায় আগেও আরও তিনজনের করোনা ধরা পড়েছিল। করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা পাঁচজনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে সোমবার পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়।
খেজুরির হেঁড়িয়া এবং উদাখালি বাজার ১১৬ বি জাতীয় সড়কের একেবারেই পাশে। কয়েকশো দোকানপাট রয়েছে সেখানে। একইসঙ্গে নিয়মিত দুবেলা আনাজ এবং মাছের বড় বাজার বসে। সেখানে প্রচুর লোকের যাতায়াত হয়। তাই সংক্রমণ আটকানোর জন্য ওই দুটি বাজার আগামী এক সপ্তাহ নির্দিষ্ট সময়ে খোলা-বন্ধের রাখতে ব্যবসায়ী সংগঠনদের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি, কলাগেছিয়া বাজার খোলা নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে ব্লক প্রশাসন। এ ব্যাপারে রবিবার বিকেল থেকে গোটা ব্লকে মাইকে প্রচার চালায় ব্লক প্রশাসন।
খেজুরি-১ এর বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘ওই তিন জায়গায় নিত্য প্রয়োজনায় জিনিস ছাড়া অন্য দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারবেন। ওই সময়ে সকলকে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।’’ প্রশাসনিক নির্দেশ প্রসঙ্গে হেঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম প্রধান নীলাঞ্জন মাইতি বলেন, ‘‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে রবিবার বাজার বন্ধ রাখার জন্য বার্তা দেওয়া হয়েছিল। সেই মাফিক স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আবেদন রেখেছি। আগামী এক সপ্তাহ অকারণে যাতে কেউ বাড়ির বাইরে না বেরোয়, সে জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।’’
হলদিয়া পুরসভায় একটি ওয়ার্ডের একটি অংশে নুতন করে লকডাউন শুরু হয়েছে। কিন্তু শিল্প শহরের অন্য সব অংশে যেভাবে আমজনতা রাস্তাঘাটে বেরিয়ে পড়ছেন, তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রবিবারও হলদিয়া মহকুমায় ১৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর পরেই সোমবার থেকে পথে নামল মহাকুমা পুলিশ। এলাকায় এলাকায় মাইকে করে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এবং সামাজিক দূরত্ব বৃদ্ধি পালন করার অনুরোধ করা হচ্ছে পুলিশের তরফ থেকে। যাঁরা পালন করবে না, তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। পাশাপাশি, মাস্ক না পরলে ক্রেতাদের কিছু বিক্রি না করার অনুরোধ করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
এ দিন সকালে ব্রজলালচক মোড়, চৈতন্যপুর এবং দুর্গাচক পুলিশি নজরদারি ছিলো চোখে পড়ার মতো। মাস্কবিহীন কাউকে দেখলেই পুলিশ তৎক্ষণাৎ তাঁকে আটকে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে বা মাস্ক পরতে বাধ্য করছে। এ দিন বিকেল ৫টা থেকে চৈতন্যপুর বাজার তিন দিনের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসনের। এদিকে, হলদিয়া মহাকুমা আদালতের আইনজীবী তথা এক কাউন্সিলরের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পরে হলদিয়া মহকুমা আদালত ২৪ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হলদিয়া বার অ্যাসোসিয়েশন। এ দিন আদালতের দুই-বিচারপতি সহ ৮৭ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।