প্রতীকী ছবি।
যত দিন গড়াচ্ছে, তত ‘অরেঞ্জ জোনে’ পৌঁছনোর সিড়ি থেকে এক ধাপ নীচে নেমে যাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর।
সোমবারের পরে মঙ্গলবারও শিল্প শহর হলদিয়ায় আরও এক করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। গত কয়েক দিনে এই নিয়ে নতুন করে আরও তিন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে হলদিয়ায়। বারবার করোনা খাতায় শিল্প শহরের নাম উঠে আসায় প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি করোনা সংক্রমণ রুখতে এবং লকডাউনের নিয়ম বিধি মানছেন না হলদিয়াবাসী!
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নতুন করে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে প্রথমে হলদিয়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। তারপর তাঁকে কলকাতার নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে সম্প্রতি হলদিয়া ফিরেছেন ওই ব্যক্তি। এরপরই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হলদিয়া মহাকুমা হাসপাতালে লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে জানা যায়, ওই ব্যক্তি করোনা পজ়িটিভ।
ওই ব্যক্তিকে পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি হলদিয়ার যে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন, সেখানের কর্মী এবং ভর্তি থাকা অন্য রোগীদের গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, করোনা আক্রান্তের পরিবারের সদস্যদের এবং সংস্পর্শে আসা লোকেদের হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘মঙ্গলবার হলদিয়ার আরও একজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে বড়মায় পাঠানো হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, সোমবারও হলদিয়ার ভবানীপুর এলাকায় একটি ভূষিমালের দোকানের মালিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি গত ছয়-সাত দিন ধরে জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন। ২ মে তাঁকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে রাখা হয়। রবিবার বৃদ্ধের লালারসের নমুনা মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো পরীক্ষার জন্য হয়। সোমবার সকালে বৃদ্ধের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। ওই দিনই তাঁকে বড়মা করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। অন্য দিকে ওই বৃদ্ধের পরিবারের ১১ জন সদস্য-সহ ১৯ জনকে চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ১৯ জনেরই লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে মঙ্গলবার পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু বারবার হলদিয়াতেই কেন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে?
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে এখনও রাস্তাঘাটে প্রচুর লোকের আনাগোনা রয়েছে। এলাকার বাজারগুলিতে প্রতিদিনই উপচে পড়ছে ভিড়। বাইক নিয়ে লোকে আড্ডার মেজাজে ঘুরছেন। সব দেখেও পুলিশ-প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আবার, কিছু বাসিন্দার দাবি, শিল্প শহর হওয়ায়, হলদিয়ায় ভিন্রাজ্যের গাড়ি, চালকেরা আসছেন। তাঁদেরও ঠিক মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে না।
যদিও স্থানীয়দের ওই আশঙ্কা উড়িয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই বলেন, ‘‘হলদিয়া থেকে পরপর দু-দিন যে দুজন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে, তাঁদের কলকাতায় যাতায়াত ছিল। ফলে সেখান থেকেও তাঁদের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে।’’