প্রতীকী ছবি
মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ, দু’মাসেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছুঁয়েছিল। কিন্তু তারপর মাত্র দু’সপ্তাহেই আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ পেরিয়ে গেল জেলায়।
জেলায় নতুন করে ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯৯ জন। রবিবার নতুন করে ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বর্তমানে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০৮ জন। আক্রান্তদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্য। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নতুন ৯ জন আক্রান্তের মধ্যে ৪ জন ভগবানপুর-১ ব্লক, একজন পটাশপুর-২ ব্লক, ৩ জন কোলাঘাট ব্লক এবং একজন হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের বাসিন্দা। ভগবানপুর-১ ব্লকের কাজলাগড় এবং গুড়গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই যুবক ও তাঁদের একজনের পরিবারের এক মহিলা সদস্য মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে স্কুলভবনে নিভৃতবাসে ছিলেন। লালারসের নমুনা পরীক্ষায় তাঁদের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এ দিন তাঁদের পাঁশকুড়া বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভগবানপুর-১ ব্লকের কোটবাড় পঞ্চায়েতের বাসিন্দা এক যুবক গুজরাত থেকে ফিরে নিভৃতবাসে ছিলেন। তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পরে তাঁকেও বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পটাশপুর-২ ব্লকের সাতশতমাল পঞ্চায়েতের বাসিন্দা এক যুবকের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। ওই যুবক সম্প্রতি মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন। এছাড়াও কোলাঘাট ব্লকের ৩ জন ও হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের বাসিন্দা এক পরিযায়ী শ্রমিক সম্প্রতি ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছিলেন। তাঁদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসায় বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় নতুন করে ৯ জন করোনায় আক্রান্ত। সকলকে পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্তের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। মাত্র দু’সপ্তাহে একশো জনেরও বেশি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরে আসাকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশেরই করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। করোনা আক্রান্তদের অধিকাংশই মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি ও কর্নাটকের মতো বেশি করোনা আক্রান্ত এলাকা থেকে আসা। তবে ওই সব রাজ্য থেকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ করোনা আক্রান্ত হলেও তাঁদের সংস্পর্শে এসে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হার খুবই কম। আক্রান্তদের সুস্থতার হারও ভাল। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ সমুদ্র সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্বাস্থ্য জেলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪হাজার ২০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ৪৯ জনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্তদের প্রায় ৯০ শতাংশ পরিযায়ী শ্রমিক। আক্রান্তদের ৪৭ জনই চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা কম। এটা হলেও আশার কথা।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ করোনায় আক্রান্ত হলেও দ্রুত তাঁদের চিহ্নিত করে আলাদা করার ফলে নতুন সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে।’’