প্রতীকী ছবি।
এতদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালে মর্গ ছিল। তবে করোনা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত হবে না। তবে মৃতদেহ সংরক্ষণ করা যাবে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখানে একটি ঘরে মরচুয়ারি কুলার মেশিন বসানো হয়েছে। আপাতত, চারটি মেশিন বসানো হয়েছে। প্রয়োজনে পরে মেশিনের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। সম্প্রতি মর্গের এই পরিকাঠামো গড়ার কাজ শেষ হয়েছে। কুলারে দেহ রাখাও শুরু হয়েছে।
করোনায় মৃতের দেহ পরিজনেদের দেওয়া হয় না। যাবতীয় বিধি এবং সতর্কতা মেনে প্রশাসনই দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে। মেদিনীপুর এবং খড়্গপুরে বৈদ্যুতিক চুল্লি রয়েছে। চুল্লিতে দেহ সৎকার করা হয়। নির্দিষ্ট কবরস্থানও রয়েছে। জানা যাচ্ছে, দিনের দিন করোনায় মৃতের সৎকার করা সম্ভব হচ্ছে না, মৃতদেহ জমে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। সবদিক দেখেই এখানে মরচুয়ারি কুলার মেশিন বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ নিয়ে নিয়ে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী প্রমুখ। সকলেরই মত ছিল, করোনা হাসপাতালে মৃতদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এরপর তড়িঘড়ি প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হয়। এর আগে মৃতদেহ রাখার ক্ষেত্রে ভরসা ছিল মূলত ফর্মালিন ও স্ট্যান্ড ফ্যান।
উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর মানছেন, ‘‘শালবনির করোনা হাসপাতালে মরচুয়ারি কুলার মেশিন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ওখানে চারটি মৃতদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ এর ফলে কিছু দিনের জন্য দেহ এখানে রাখা যাবে। মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠাতে হবে না। তবে ময়নাতদন্তের প্রয়োজনে মেডিক্যালের মর্গেই পাঠাতে হবে।
গত মঙ্গলবার জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলাশাসককে সতর্ক করে রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহকে বলতে শোনা গিয়েছে, "এখানে অ্যাক্টিভ কেস জুলাই মাসের থেকে ৩০০ কম আছে। এখন ১,১০০ অ্যাক্টিভ কেস আছে। কিন্তু ডিসচার্জ রেটের সঙ্গে দেখতে হবে ডেথ রেট কি আছে। ডেথ রেট ১.৩৮। গ্রামাঞ্চলে ডেথ রেট ১ এর কম থাকা উচিত। এখন আছে প্রত্যাশিতের চেয়ে খানিকটা বেশি।’’
ওই বৈঠকের পরে এক সপ্তাহ হয়নি। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যুর হার খানিক বেড়েছে। এখন জেলায় করোনায় মৃত্যুর হার ১.৫৩ শতাংশ। এই অক্টোবরেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, অক্টোবরের গোড়া পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনায় আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ১৬০। শনিবার সংখ্যাটা হয়েছে ১৭৭। কয়েকজনের অবশ্য কো- মর্বিডিটি ছিল। করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। গড়ে প্রতিদিন দেড় শতাধিক করোনা সংক্রমিতের হদিশ মিলছে জেলায়।
জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, সংক্রমণ মোকাবিলায় যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মৃত্যুর হার আরও কমানোর চেষ্টাও হচ্ছে। সক্রিয় করোনা রোগীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখা হচ্ছে নিয়মিত।
জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯