অনুষ্ঠানে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র
করোনা প্রসঙ্গে নীরবতা ভাঙলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি। কোনও তথ্য-পরিসংখ্যান না দিলেও জেলা যে করোনামুক্ত নয় তা পরোক্ষে স্বীকার করলেন তিনি। সোমবারই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে ঝাড়গ্রাম জেলায় নতুন করে ৮ জন করোনা আক্রান্তের তথ্য দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র ফেরত ওই ৮ জন জামবনি ব্লক এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের সরকারি নিভৃতাবাসে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ৮ জনই উপসর্গহীন।
সোমবার ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ আয়োজিত ‘করোনা-যোদ্ধাদের’ সম্মান-জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের মঞ্চে জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমরা কোনও দিনও দাবি করব না করোনামুক্ত হয়ে গিয়েছি। কারণ, করোনা যেমন যেমন রোজ টেস্ট হয়, কেউ না কেউ পজ়িটিভ বেরোবে। তারপরে সুস্থ হয়ে যাবে। যতদিন না প্রতিষেধক পাওয়া যাবে ততদিন এটাই প্রক্রিয়া।’’
ঝাড়গ্রাম জেলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গোড়া থেকেই মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন জেলাশাসক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। প্রশাসনের এই নীরবতা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। জেলায় প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা কত, কোথায় আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে, কতজনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, এমন কোনও তথ্যই আজ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে মেলেনি।
এই প্রথম ঝাড়গ্রামে জেলা পরিষদের একক উদ্যোগে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল। জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে জেলা পরিষদের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের জন্যই এই আয়োজন বলে জল্পনা চলছিল। এ দিন জেলা প্রশাসনের সিদো-কানহো সভাঘরে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য দু’টি পর্বে হয়। সেখানে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর দু’জনেই অবশ্য ছিলেন। এ দিন জেলাশাসক দাবি করেন, লকডাউন পর্বে প্রশাসন-পুলিশের উদ্যোগে মানুষকে বোঝানোর কাজটা যথাযথ হয়েছে। তাই করোনা সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া গিয়েছে। আয়েষা বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন এবং বিভিন্ন দফতর-সহ সব মহলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে টিম হিসেবে কাজ কাজ করার ফলে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি। কিন্তু এখানেই তো শেষ নয়। তাই মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধিগুলি মেনে চলতে হবে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাসও জানান, করোনা ভাইরাস চলে গিয়েছে এমন ভাববেন না। তাই সচেতনতার কাজটা চালিয়ে যেতে হবে