প্রতীকী ছবি।
কমেছে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা। অথচ সংক্রমণের হার বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে, দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে পশ্চিম মেদিনীপুরে সংক্রমণের হার বেড়েছে প্রায় ১১-১২ শতাংশ। একাংশ মানুষের মধ্যে মাস্ক না পরা, জমায়েত করা, দূরত্ব বিধি না মানার প্রবণতার জন্যই সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জেলার স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য অভয় দিচ্ছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়েছে।’’ জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীর বক্তব্য, ‘‘পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। তবে উৎসবের মরসুমে ঘরবন্দি থাকা কষ্টদায়ক হলেও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এই বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তই বিপদকে ঠেকাতে পারে।’’
দুর্গাপুজো মিটেছে। এখন বিসর্জন পর্ব চলছে। সামনে লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো রয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়ে মাস্ক পরা, জমায়েত না করা, দূরত্ব বিধি মেনে চলা জরুরি।
পুজোর দিনগুলিতে করোনা সংক্রমণের ছবিটা ঠিক কী ছিল?
সাধারণত, জেলায় দিনে গড়ে ১,২০০-১,৩০০ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। সংক্রমণের হার থাকে ৭-৮ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, পুজোর দিনগুলিতে গড়ে ৫০০ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। আর সংক্রমণের হার ১৯ শতাংশ! অর্থাৎ, প্রতি একশোজনের ১৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। বিষয়টি উদ্বেগের ঠেকছে অনেকের কাছে। জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে চতুর্থী পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত ছিলেন ১২,৯৪১ জন। দশমীতে সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১৩,৫৩১ জন। অর্থাৎ, পঞ্চমী থেকে দশমী- এই ছ'দিনে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৫৯০ জন। আর এই সময়ের মধ্যে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২,৯৬৪ জনের। করোনার নিশ্চিত পরীক্ষা আরটিপিসিআর। জানা যাচ্ছে, আরটিপিসিআর পরীক্ষায় সপ্তমীতে সংক্রমণের হার ছিল ১৪ শতাংশ। অষ্টমীতে ১২ শতাংশ, নবমীতে ১৬ শতাংশ।
মৃত্যুর হারও খানিক বেড়েছে। মাস কয়েক ধরেই মৃত্যুর হার দেড় শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল। উৎসবের দিনগুলির নিরিখে তা ২ শতাংশে পৌঁছেছে। চতুর্থী পর্যন্ত জেলায় করোনা সংক্রমিত ১৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। দশমীতে সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১৯৫। অর্থাৎ, এই ছ'দিনে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, সার্বিকভাবে জেলায় নয়, কিছু আঞ্চলিকস্তরে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। জেলা এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘সংক্রমিত হওয়া অনেকটাই নির্ভরশীল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে।’’
তাঁর মতে, উৎসবের মরসুমে যাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তাঁদের একাংশ বয়স্ক ছিলেন। এঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনায় কম ছিল। বেশ কয়েকজনের কো-মর্বিডিটি ছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি দেখে করোনা পরীক্ষা ফের বাড়ানো হচ্ছে।