সিল করে দেওয়া হয়েছে এলাকা।
দিনে দিনে যেন করোনার ‘আতুড় ঘর’ হয়ে যাচ্ছে জেলার শিল্প শহর!
বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় নতুন করে পাঁচ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এঁরা সকলেই দিন কয়েক আগে করোনা আক্রান্ত ব্রজলালচকের ভূষিমাল বিক্রেতার পরিজন। কোয়রান্টিনে ছিলেন চণ্ডীপুরের করোনা হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হলদিয়ার ভবানীপুর থানার ব্রজলালচক এলাকার ওই বৃদ্ধকে করোনা উপসর্গ নিয়ে রবিবার হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃদ্ধের লালারসের নমুনা পরীক্ষার পরে সোমবার জানা যায় যে, তিনি করোনা আক্রান্ত। তাঁকে পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা পরিবারের ১১ জন এবং দোকানের জিনিসপত্র আনার কাজে যুক্ত গাড়ির চালক সহ ১৯ জনকে চণ্ডীপুরের লেভেল-১ করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। ওই ১৯ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বৃদ্ধের পরিবারের পাঁচ সদস্যের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। এর পরেই চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতাল থেকে ওই পাঁচ জনকে বড়মা করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘হলদিয়ায় মুদি ব্যবসায়ী বৃদ্ধের পরিবারের পাঁচ সদস্য নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের সকলকেই বড়মায় ভর্তি করানো হয়েছে। এলাকায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
হলদিয়ার স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, ব্রজলালচকে বৃদ্ধের ভূষিমাল দোকানের পার্শবর্তী ৫০-৬০টি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভবানীপুর থানা এলাকায় বৃদ্ধের বাড়ি সংলগ্ন ৯১ পরিবার রয়েছে। ওই এলাকা কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে জানিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকায় মাইকে প্রচার করে জানতে চাওয়া হচ্ছে, কারা করোনা আক্রান্ত মুদি ব্যবসায়ীর দোকান থেকে জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন। বৃদ্ধির বাড়ির এলাকার সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার ওই এলাকা ঘুরে দেখেন জেলাশাসক পার্থ ঘোষ, জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
পূর্ব মেদিনীপুরে করোনার প্রথম সংক্রমণ ছড়িয়েছিল এগরা থেকে। বর্তমানে ওই এলাকায় নতুন করে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েনি। কিন্তু হলদিয়াতে যেন করোনা সংক্রমণ থামতেই চাইছে না। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই হলদিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে আশার কথা এই যে, আক্রান্তদের প্রায় সকলেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।