বাড়ির পথে। নিজস্ব চিত্র
করোনা রোগীদের সঙ্গে অসহযোগিতার বহু উদাহরণ সামনে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে। কখনও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি স্থানীয়েরা, তো কখনও অ্যাম্বুল্যান্স থেকে রোগীকে নামিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালে মঙ্গলবার উঠে এসেছে মানবিকতার ছবি। ৪০ জন করোনা জয়ীকে এ দিন সরকারি বাসে করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, যে ৪০ জন এ দিন ছাড়া পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দিঘার দু’জন, কোলাঘাটের ১০ জন, তমলুকের সাত জন, মহিষাদলের তিন জন, পাঁশকুড়ার সাতজন, ময়নার এক জন, এগরার একজন, নন্দকুমারের তিন জন, মেচেদার দু’জন এবং হলদিয়ার চার জন রয়েছেন। তাঁদের দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরিবারের সদস্যদের ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাড়ির কাছাকাছি বাসস্ট্যান্ডে চলে আসতে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এ দিন ৪০ জন করোনা জয়ীকে সরকারি বাসে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’’ বর্তমানে বড়মায় ৭০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এর মধ্যে এ দিন এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যুও হয়েছে বড়মায়। মৃত ব্যক্তির বাড়ি পাঁশকুড়া পুর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।
এদিকে তমলুক শহরে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত একটানা তিনদিনের সম্পূর্ণ লকডাউন শুরু হয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা বড়বাজার, হাসপাতাল মোড় ও মহাপ্রভু বাজার এলাকা সহ শহরের অন্যান্য এলাকার দোকানপাট সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। লকডাউন ভেঙে দোকান খোলা বন্ধ করতে সকাল থেকে পুলিশবাহিনী অভিযান চালায়। তমলুকের পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘শহরের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই লকডাউন মেনে চলেছেন। পুলিশ ও পুরসভাকে সেভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়নি।’’
যদিও বিপরীত ছবি দেখা গিয়েছে ময়নার বলাইপন্ডা ও নন্দকুমার বাজারে। বলাইপন্ডা এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ময়না ব্লকে ২২ জুলাই থেকে ৫ অগস্ট পর্যন্ত সোম ও শুক্রবার ছাড়া পুরো লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন সকাল থেকেই সড়কের ধারে আনাজ ও মাছের দোকান বসেছে। পুলিশ-প্রশাসনের কোনও নজরদারি ছিল না। নন্দকুমার বাজারেও লকডাউন উপেক্ষা করে এ দিন প্রায় সব দোকান খোলে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। পুলিশের অবশ্য দাবি, তারা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)