ছবি এএফপি
ভিন রাজ্য থেকে জেলায় ফিরতে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের দল। স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ম মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁরা সরকারি নিভৃতবাসে নাকি নিজের বাড়িতে গৃহবন্দি থাকবেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। অবিলম্বে এই বিষয়ে সর্বদল বৈঠক ডেকে প্রশাসন স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করুক বলে দাবি হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা সংগঠনের।
করোনা সংক্রমণ শুরুর নিরিখে রাজ্যে দ্বিতীয় জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। সম্প্রতি কাঁথি, মহিষাদল, কোলাঘাট থেকেও করোনা সংক্রমণের খবর এসেছে। ইতিমধ্যে জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে ফিরতে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের দল। যতদিন এগোবে ততই বাড়বে সেই সংখ্যা। জেলার প্রবেশদ্বারগুলিতে ভিন্ রাজ্য ফেরত শ্রমিকদের জন্য দিনরাতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির চালু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিজের গ্রামে বা শহরে ফিরে কেউ থাকছেন বাড়িতে, কোথাও আবার তাঁদের সরকারি নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করছে স্থানীয় প্রশাসন। অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে আলাদা ঘর ও শৌচালয় না থাকায় তাঁদের সরকারি নিভৃতবাসে রাখার দাবি জোরাল হয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামবাসীদের উদ্যোগে স্থানীয় সরকারি স্কুলে গ্রামে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় জায়গায় এই নিয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশ না থাকায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফেরার পর বাড়িতেই থাকছেন। অনেক জায়গায় বাড়িতে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অবলীলায় এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগও সামনে এসেছে। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে অবিলম্বে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করার আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা সংগঠন।
সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘কোলাঘাট ব্লকের বৃন্দাবনচকে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মাইক প্রচারে বলা হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের স্থানীয় সরকারি স্কুলে থাকতে। এই ব্লকেই উত্তর জিয়াদায় আবার স্থানীয় প্রশাসন পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত। আমাদের দাবি অবিলম্বে সর্বদল বৈঠক ডেকে প্রশাসন এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ জারি করুক।’’
কয়েকদিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই চন্দ্র মণ্ডল দাবি করেছিলেন, ‘‘জেলায় পর্যাপ্ত আশাকর্মী রয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়িতে থাকলেও আশাকর্মীদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখবে।’’ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায় বলা আছে, যাঁদের শারীরিক কোনও সমস্যা নেই তাঁরা থাকবেন হোম কোয়রান্টিনে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সন্দেহভাজন পরিযায়ী শ্রমিকদের সরকারি নিভৃতবাসে রাখা হবে।’’