প্রতীকী ছবি।
রেলরক্ষীদের সূত্রে প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল খড়্গপুরে। তারপরে ক্রমেই বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। এবার খড়্গপুর শহরের উপকণ্ঠে সালুয়ার ইএফআর ক্যাম্পে প্রশিক্ষণরত ৪৫ জন কনস্টেবল একসঙ্গে আক্রান্ত হলেন।
তাঁদের মধ্যে তিনজনের রিপোর্ট রবিবার রাতে পজ়িটিভ এসেছিল। সোমবার সন্ধ্যায় আরও ৪২ জন আক্রান্ত বলে জানায় স্বাস্থ্য দফতর। আক্রান্ত কনস্টেবলরা নদিয়া, বাঁকুড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে সালুয়ার এই ইএফআর ক্যাম্পে রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন শাখার ৪৪০ জন কনস্টেবল প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। দিন কয়েক আগে তাঁদের একজন করোনা পজ়িটিভ হন। তারপর উপসর্গ থাকা আরও সাত কনস্টেবলের পরীক্ষা হয়। সেখানে চারজন নেগেটিভ হলেও তিনজনের রিপোর্ট অমীমাংসিত আসে। ওই তিনজনের নমুনা পরে পৃথকভাবে পরীক্ষা হলে রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়।
এরপরে শনিবার নতুন করে আরও ৬০ জন কনস্টেবলের নমুনা নেওয়া হয়। রবিবার রাতে সেগুলি অমীমাংসিত এলে পৃথকভাবে পরীক্ষা করানো হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁদের মধ্যে ৪২ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বাকিদের রিপোর্ট অবশ্য নেগেটিভ এসেছে। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “রবিবার থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সালুয়ার ৪৫ জন প্রশিক্ষণরত কনস্টেবল করোনা আক্রান্ত হয়েছে। একজন করোনা আক্রান্তে সংস্পর্শে আসায় ওঁদের পরীক্ষা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে সকলের রিপোর্ট অমীমাংসিত হলেও পৃথকভাবে পরীক্ষার পরে পজ়িটিভ হয়েছে। আরও অনেকের নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে।”
খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। আক্রান্তদের আপাতত মেদিনীপুরে আয়ুষ করোনা হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
রিপোর্ট জানার পরে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশি পদক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত সালুয়া থেকে গোপালী পর্যন্ত সব দোকান সকাল ১০টার পরে বন্ধ থাকবে। সালুয়া বাজার এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। সালুয়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তথা ভেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রোশল লামা বলেন, “ওই কনস্টেবলেরা যেহেতু এলাকায় ঘুরেছেন তাই ক্যাম্পের বাইরে থাকা দোকানিদের পরীক্ষার আর্জি জানাচ্ছি।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ধাপে-ধাপে সকলের নমুনা সংগ্রহ হবে।
এদিন সন্ধ্যায় খড়্গপুর শহরেও দু’জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। একজনের বাড়ি গোলবাজার এলাকায়। অন্যজন আরপিএফ জওয়ান। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল জানান, শহরের দু’জন আক্রান্তের মধ্যে যিনি গোলবাজারের, তাঁর নমুনা মহকুমা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সম্ভবত তাঁর উপসর্গ ছিল। ওই আরপিএফ জওয়ান তাঁর এক সহকর্মীর সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন।