প্রতীকী ছবি।
আশা জেগেছিল। কিন্তু শুক্রবার যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে আপাতত আর ‘অরেঞ্জ জোনে’ যাওয়া হচ্ছে না পূর্ব মেদিনীপুরের। শুক্রবার একদিনেই জেলায় মিলেছে নতুন চার আক্রান্তের খোঁজ। সকলেই হলদিয়ার বাসিন্দা।
হলদিয়ায় আগে পাঁচজন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি আশাকর্মীরা সংক্রমিত এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন বাসিন্দাদের নমুনা পরীক্ষা করছেন। সেই পরীক্ষা করতে গিয়েই নতুন করে চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি সামনে এসেছে। তবে এঁদের কারও করোনার কোনও উপসর্গ ছিল বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, দেশজুড়ে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তরাই এখন স্বাস্থ্য দফতরের মাথাব্যথার কারণ।
স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, যে চার জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের দু’জন ভবানীপুর থানা এলাকা এবং বাকি দু’জন সুতাহাটা এবং দুর্গাচক এলাকার বাসিন্দা। এর আগে দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত হলদিয়ার যে ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তিনিও ভবানীপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। অন্যদিকে, দুর্গাচকেরও এক বৃদ্ধ আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নতুন চার আক্রান্তের মধ্যে একজন বছর তেইশের যুবক, বাকিরা মাঝবয়স্ক। ভবানীপুর এলাকার এক আক্রান্ত পেশায় গাড়ির চালক, অন্য জনের চায়ের দোকান রয়েছে। সুতাহাটা এবং দুর্গাচক এলাকার আক্রান্ত দু’জন পেশায় কীর্তন শিল্পী এবং ব্যাঙ্ক কর্মী। ওই ব্যাঙ্ক কর্মী নন্দীগ্রামের একটি ব্যাঙ্কে কর্মরত। জরুরি পরিষেবা হিসাবে লকডাউনেও তিনি অফিসে গিয়েছিলেন। ওই এলাকার পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার ব্যাঙ্কে লেনদেন বন্ধ ছিল। এ দিন জীবাণুমুক্তকরণ করা হয় ব্যাঙ্ককে।
নতুন চার আক্রান্তকে পাঁশকুড়ার করোনা হাসপাতালে। হলদিয়া ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, সুতাহাটা ও দুর্গাচক থেকে ৪২ জনকে চণ্ডীপুরের নিভৃতবাস কেন্দ্রে (কোয়রান্টিন সেন্টার) পাঠানো হয়েছে। ভবানীপুর থেকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে ৩০ জনকে পাঠানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে ১১ জনকে রাখা হয়েছে চণ্ডীপুরের কেন্দ্রে। বাকি ১৯ জনকে রাখা হয়েছে হলদিয়ারর বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হোস্টেলে করা নিভৃতবাস কেন্দ্রে। আক্রান্তদের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ হল কী করে, তা জানার চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘হলদিয়ায় নতুন করে চারজন করোনা আক্রান্ত হয়ে বড়মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখনও পর্যন্ত তাঁদের সংক্রমণের কারণ কিছু জানা যায়নি।’’
প্রথম থেকেই হলদিয়াকে কেন্দ্রীয় সরকার ‘হটস্পট’ তথা ‘রেড জোনে’ রেখেছিল। সেখানে হলদিয়াবাসীর একাংশ কোনও রকম সরকারি নির্দেশিকা মানছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল। নতুন করে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেও হুঁশ ফেরেনি সাধারণ মানুষের। এখনও থার্টিন মোড়, মিলন-সহ বহু এলাকায় সাপ্তাহিক ও দৈনন্দিন হাটগুলিতে ভিড় হচ্ছে। রাস্তায় বাইকেরও কমতি নেই। চৈতন্যপুর বাজার, মঞ্জুশ্রী মোড়, সিটি সেন্টার সব জায়গাতেই উঠতি যুবকদের বাইক ছোটাতে দেখা যাচ্ছে। তবে হলদিয়ার যে তিন জায়গায় সংক্রমণ ধরা পড়েছে, শুক্রবার রাতেই এলাকাগুলি সিল করার কাজ শুরু হয়েছে।