প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে ভিন্ রাজ্যের নার্সদের ঘুরমুখো হওয়া নিয়ে সঙ্কটের মধ্যেই এ বার এ রাজ্যের নার্সদের বিরুদ্ধে লকডাউন বিধি অমান্য করার অভিযোগ উঠল। সামাজিক দূরত্ব বিধি ভুলে বিক্ষোভ দেখানোয় পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালের ১৬ জন নার্সকে একসঙ্গে শো-কজও করা হয়েছে। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্যদফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ মে গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালের ১৬ জন নার্সকে (জিএনএম) শো-কজ করা হয়। ব্লকের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসেনজিৎ দাসের সই করা শো-কজ নোটিস (মেমো নম্বর ১২০ থেকে ১৩৫, তারিখ ১২ মে ২০২০) হাসপাতালের সিস্টার ইনচার্জ-সহ ১৬ জন নার্সের কাছে পাঠিয়ে বলা হয়, ৪ দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে।
সেই মতো শনিবার বিকেলে ১৬ জন নার্সই মুখবন্ধ খামে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের নিজের জবাব দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের সিস্টার ইনচার্জ চন্দ্রা সিংহকে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অন্য নার্সদেরও মুখে কুলুপ। তবে ব্লকের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসেনজিৎ দাস শো-কজের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘‘নার্সদের শো- কজের জবাব পেয়েছি। এর বেশি কিছু বলব না।’’
ঘটনার সূত্রপাত গত ৯ মে-র এক ঘটনার প্রেক্ষিতে। হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালের অন্তর্বিভাগের ১৬ জন নার্স অন্তর্বিভাগে কাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সে দিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসেনজিৎ দাসের কক্ষের সামনে জড়ো হন। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল, অন্তর্বিভাগের সব নার্সকে পিপিই সরবরাহ করতে হবে। এই সমস্যা নিয়ে কথা বলতে তাঁরা একসঙ্গে বিএমওএইচের ঘরের ভিতরেও ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন, যেখানে হাসপাতালে আসা রোগী, রোগীর বাড়ির লোক ও সাধারণ মানুষকে বলা হচ্ছে লকডাউন বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে, সেখানে স্বাস্থ্যবিভাগে কর্মরত নার্সরা একসঙ্গে জড়ো হয়ে দাবি পেশ করেন কী ভাবে!
লকডাউন অমান্য করার অভিযোগ উঠতেই নড়েচড়ে বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিস্টার ইনচার্জ-সহ ১৬ জন নার্সকে আলাদা আলাদা ভাবে শো-কজের নোটিস পাঠান বিএমওএইচ। এ নিয়ে হাসপাতালের অন্দরে জলঘোলা হতে থাকে। তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘এটা তেমন কিছু বিষয় নয়, প্রশাসনিক ব্যাপার।’’