পরিদর্শন: খড়্গপুরে রাজ্য পুলিশের ডিজি। নিজস্ব চিত্র
জেলার সর্বাধিক গণ্ডিবদ্ধ এলাকা রেলশহরে। ১৩টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা চিহ্নিত হয়েছে। শহরে প্রতি ঘণ্টায় পরিস্থিতি বদলানোয় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতিটি গণ্ডিবদ্ধ এলাকার পরিধি বাড়িয়ে কড়া লকডাউনের প্রস্তুতি চলছিলই। এ বার শহরে এসে লকডাউনে কোনও ঢিলেমি নয় বলে বার্তা দিয়ে গেলেন স্বয়ং রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি)!
বৃহস্পতিবার খড়্গপুর পুরসভার সভাগৃহে এসে বৈঠকে যোগ দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। মূলত জেলা পুলিশের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠক করতেই এ দিন তিনি খড়্গপুরকে বেছে নিয়েছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। বৈঠকের শেষে ডিজি সালুয়া ইএফআর ক্যাম্প ও রেল পুলিশের অফিসে যান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পুলিশের সঙ্গে পুরসভায় রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়েই কথা বলেন ডিজি। জেলা পুলিশ সুপার ডিজিকে পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, খড়্গপুর শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আগামী দিনেও আরও সক্রিয়ভাবে লকডাউন-সহ পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা বলেন ডিজি। বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডিজি বীরেন্দ্র বলেন, “করোনা পরিস্থিতির পর থেকে জেলায় আসা হয়নি। তাই এই জেলায় একটি পর্যালোচনা বৈঠক করে সকলের সঙ্গে কথা বললাম। সকলেই খুব ভাল কাজ করেছেন। এটা ভবিষ্যতেও করতে হবে। সেই সঙ্গে কন্টেনমেন্ট জ়োনে যে লকডাউন বলা হয়েছে সেখানে যেন কোনও ঢিলেমি না হয় সেটা বলেছি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩৩টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে ১৩টি খড়্গপুর শহরের। বুধবার গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা ১০টি থাকলেও পরে জেলা থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ আরও একটি এলাকা জুড়তে বলা হয়। একইসঙ্গে রাতের আসা রিপোর্টে শহরে আরও তিন আরপিএফ ও এক রেল হাসপাতালের কর্মী করোনা আক্রান্ত হন। সেই ঘটনায় নিউ ডেভেলপমেন্টে ওই রেলকর্মীর বাড়ি সংলগ্ন এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়। এ ছাড়াও পুলিশ জানতে পারে, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা শহরের নিউটাউনের এক মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিন সেই এলাকাটিও গণ্ডিবদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত হয়। মহকুমাশাসক বলেন, “আগের তুলনায় কয়েকটি এলাকা বেড়ে ১৩টি এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন হয়েছে। এগুলিতে আমরা কড়াভাবেই লকডাউন করব। কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। বাজারের প্রয়োজন হলে আমাদের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে আমরা পৌঁছে দেব।” এ দিন পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারও বলেন, “আগের তুলনায় আরও বড় পরিধি নিয়ে আমরা কন্টেনমেন্ট জ়োনে কড়া লকডাউন পালন করব। আমাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের সমন্বয় থাকছেই।”
অবশ্য দ্রুত বদলাচ্ছে পরিস্থিতি। বুধবার রাতে আরও ৯জনের করোনা পরীক্ষার অমীমাংসিত রিপোর্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছে শহরবাসীর। জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “অমীমাংসিত রিপোর্টে ওই ৯জনের মধ্যে ৬জন আরপিএফ ও ৩জন রেলকর্মী রয়েছেন। সকলেই করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় রেল হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল।”