কয়েকদিনের খাবার সংগ্রহ করতে ভিড় বাজারে। তমলুকে।
গুজব বড় বালাই!
বাজার বন্ধের নিছক গুজবের জেরে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গিয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত মধ্যবিত্তের। জেলা সদর-সহ অন্য বেশ কয়েকটি বাজার থেকে হঠাৎই যেমন উধাও হয়ে যাচ্ছে আলু-পেঁয়াজের মতো সামগ্রী। তেমনই যেখানে ওই জিনিসগুলি পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে তা কিনতে ছ্যাঁকা খাচ্ছেন ক্রেতারা। পরিস্থিতি এমনই যে গুজব রুখতে তমলুকের বড়বাজার, কোলাঘাট এবং অন্য এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে।
বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজবের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই তমলুক, পাঁশকুড়া, মেচেদা, কোলাঘাটের বিভিন্ন বাজারে আলু, পেঁয়াজ, ডাল-সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কেনার জন্য ভিড় করতে শুরু করেন বাসিন্দারা। এ দিন তা চরমে পৌঁছয়। তমলুকের বড়বাজারে বহু আলু দোকানে সকাল ১০ টার মধ্যেই আলু শেষ হয়ে। যেখানে পাওয়া গিয়েছে, সেখানে আলু কোথাও বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিক দামের ১০-১৫ টাকা বেশি দামে। পেঁয়াজ ২৫ টাকা থেকে হয়ে গিয়েছে ৩০-৩৫ টাকা।
এ দিন সকাল বেলায় পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের আনাজ বাজার ও হাটগুলিতে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী গাড়ি ভর্তি করে আলু কিনতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ওই এলাকায় দু’দিন আগে যে আলুর দাম ছিল কিলো প্রতি ১৫ টাকা, এ দিন তা বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা দরে। কোথাও আবার ৪০ টাকা। পাঁশকুড়ার চাঁপাডালির বাসিন্দা মনোজিৎ সামন্ত বলেন, ‘‘এ দিন পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারে এসে দেখি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা করে। কেউ কেউ বলছে বাজার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই প্রয়োজনের থেকে একটু বেশিই আলু কিনলাম।’’
তমলুক বড় বাজারের ব্যবসায়ী সচিন হাজরা বলেন, ‘‘করোনায় বাজার বন্ধের গুজবের জেরে বহু পরিচিত ক্রেতা বেশি করে আলু, পেঁয়াজ কিনছেন। আগে যে ক্রেতা পাঁচ কিলো আলু কিনতেন, তিনি ৫০ কিলোর এক বস্তা আলুও কিনেছেন।’’
এসইউসি’র তরফে এদিন জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে কালোবাজারি বন্ধ করা ও বেআইনি মজুতদারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। কৃষক সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।
জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বাজার বন্ধের কোনও নির্দেশিকা সরকারের তরফে আসেনি। তাই এ রকম গুজবে বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই।’’
এগরায় অবশ্য করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে এবং জমায়েত এড়াতে আগামী ২২ মার্চ এবং ২৬ মার্চ—দু’দিন গ্রামীণ হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাট বন্ধের নির্দেশনামা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বাজার কমিটি যৌথ ভাবে এলাকায় পোস্টার দিয়ে জানিয়েছে।