Coronavirus

হাজিরার দুই ছবি 

ঝাড়গ্রামে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের দফতরে এ দিনও বায়োমেট্রিক হাজিরা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০২:১২
Share:

মেদিনীপুর কালেক্টরেটে হাজিরার পরিচিত ছবি। ফাইল চিত্র

ভারতে করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের একেবারে প্রথম ধাপেই কেন্দ্রীয় সরকারের বেশিরভাগ দফতরে বায়োমেট্রিক হাজিরা বন্ধ করা হয়েছে। তবে এতদিনেও রাজ্য সরকারের তরফে এই বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা আসেনি জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুরে অবশ্য অধিকাংশ সরকারি দফতর পরিস্থিতি দেখে নিজেরাই বায়োমেট্রিক হাজিরা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল। যদিও পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে উল্টো ছবি। সেখানে প্রায় সব সরকারি দফতরে সোমবার পর্যন্ত চালু ছিল এই ব্যবস্থা।

Advertisement

ঝাড়গ্রামে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের দফতরে এ দিনও বায়োমেট্রিক হাজিরা হয়েছে। এই জেলায় ৭৯টি পঞ্চায়েতে বায়োমেট্রিক হাজিরার ব্যবস্থা রয়েছে। তার মধ্যে গোটা দশেক পঞ্চায়েতে ওই যন্ত্র খারাপ হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলিতে এখনও বায়োমেট্রিকই চলছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতেও বায়োমেট্রিক হাজির চালু রয়েছে। কেন? জেলাশাসক আয়েষা রানির জবাব, ‘‘বায়োমেট্রিক বন্ধের জন্য কো‌নও নির্দেশিকা আসেনি।’’

পশ্চিম মেদিনীপুর অবশ্য লিখিত নির্দেশিকার জন্য আর অপেক্ষা করেনি। সোমবার বায়োমেট্রিকে হাজিরা হয়েছে। তবে আজ, মঙ্গলবার থেকে ওই ব্যবস্থায় হাজিরা হবে না। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার মতে, "আঙুলের ছোঁয়া থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ শরীরে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থাকেই। তাই বায়োমেট্রিক হাজিরা এখন বন্ধ রাখাই ভাল।’’ এতদিন বন্ধ করা হয়নি কেন? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের জবাব, ‘‘নবান্ন থেকে লিখিত নির্দেশিকা আসেনি। এখন সন্দেহভাজনের সংখ্যা বেড়েছে। পরিস্থিতি এক সপ্তাহ আগেও এতটা খারাপ ছিল না। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তারপরে ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না।’’

Advertisement

মেদিনীপুরে কালেক্টরেটে আজ, মঙ্গলবার থেকে সাময়িকভাবে হাজিরা খাতা চালু হবে। মেদিনীপুর পুরসভা ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদেও আজ, মঙ্গলবার থেকে আপাতত বায়োমেট্রিক হাজিরা স্থগিত থাকবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘করোনা- আতঙ্কের জেরে হাজিরায় বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হচ্ছে।’’ মেদিনীপুরের পুর- প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষের কথায়, ‘‘হাত ছোঁয়ালেই ভাইরাস সংক্রমণের ভয় রয়েছে। সবদিক দেখেই আপাতত খাতায়-কলমে হাজিরা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যেভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সে কথা মাথায় রেখে শুধু কালেক্টরেট নয়, বিভিন্ন দফতরে সাময়িকভাবে খাতায়- কলমে সই করিয়েই হাজিরা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’ জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে বেশিরভাগ সরকারি দফতরে আপাতত ৩১ মার্চ পর্যন্ত বায়োমেট্রিকে হাজিরা ব্যবস্থা স্থগিত রাখা হচ্ছে।

খড়্গপুর পুরসভায় বায়োমেট্রিক যন্ত্র চালু থাকলেও এ দিন কর্মীরা তাতে হাজিরা দেননি বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার জানান, পুরসভায় বায়োমেট্রিকে হাজিরা পদ্ধতি বন্ধ করা হয়েছে। আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। আজ, খড়্গপুরে মহকুমাশাসকের দফতরে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা। রেল কারখানাতেও বায়োমেট্রিকে হাজিরা বন্ধ হয়েছে। তবে আর্য বিদ্যাপীঠ-সহ বেশ কয়েকটি স্কুলে সোমবারও বায়োমেট্রিকে হাজিরা চালু ছিল। আর্য বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক চণ্ডীচরণ ত্রিপাঠী বলেন, “আমাদের স্কুলে সকলেই সকলকে চেনেন। তাই বায়োমেট্রিক বন্ধ করা হয়নি। সরকারি নির্দেশিকাও পাইনি।” ঘাটাল শহরের দু’টি শপিং মলেও সোমবার এই ব্যবস্থা চালু ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement