সেই মেনুকার্ড। —নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সচেতনতার বার্তা এ বার বৌভাতের মেনুকার্ডে। ওই কার্ডের একদিকে রয়েছে খাবারের তালিকা। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা। সোমবার নীলাম্বর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে সুলগ্না বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আজ, বুধবার বৌভাতের অনুষ্ঠান রয়েছে। অনুষ্ঠানে আসা পরিজন- পরিচিতদের ওই মেনুকার্ড দেওয়া হবে। এমন মেনুকার্ড হয়েছে শুনে প্রশংসা করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। তাঁর কথায়, ‘‘এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। এ ভাবেই তো সচেতনতার প্রসার হয়। জনসচেতনতা গড়ে ওঠে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়ে সরকার লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছে। সচেতনতা অনেকখানি তৈরি হয়েছে। বিয়ের আসরেও এ ভাবে সচেতনতা প্রচার চললে এর থেকে ভাল আর কিছু হয় না।’’
পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ (এম আর) মেদিনীপুর শহরতলির কুইকোটার বাসিন্দা নীলাম্বর বলেন, ‘‘করোনার ভাইরাস আমাদের দেশেও থাবা বসিয়েছে। শুনেছি সংক্রমণের সন্দেহে জেলার কয়েকজনকে নজরবন্দিও করা হয়েছে। তাই পরিজন- পরিচিতদের মধ্যে সচেতনতার বার্তা দিতেই এমন মেনুকার্ড।’’
ওই মেনুকার্ডে অ্যালকোহল রয়েছে, এমন সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে দিনে বেশ কয়েকবার হাত ধোওয়া, হাঁচি, কাশি হলে রুমাল দিয়ে মুখ ঢাকা, যে কোনও ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সর্দি- কাশি হয়েছে এমন লোকজনকে এড়িয়ে যেতে ও তাঁদের সামনে গেলেও অন্তত এক মিটার দূরত্ব রাখার কথাও বলা হয়েছে। কারণ চোখ, নাক, মুখ দিয়ে শরীরে ভাইরাস ঢুকতে পারে। করোনা সংক্রান্ত ভুয়ো খবর থেকে দূরে থাকার বার্তাও দেওয়া হয়েছে ওই কার্ডে। লেখা রয়েছে, ‘প্রয়োজনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে খবর নিন।’ য়া রয়েছে মেনুকার্ডে।
করোনাভাইরাস আতঙ্কের জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরেও মুরগির মাংস বিক্রি কমে গিয়েছে। অনেকে মুরগির মাংস ছুঁয়েও দেখছেন না। শহরের এই বৌভাতের অনুষ্ঠানেও মুরগির মাংসের কোনও পদ থাকবে না। নীলাম্বরের এই উদ্যোগে খুশি নববধূ সুলগ্নাও। সুলগ্নার কথায়, ‘‘এ ভাবেই তো সচেতনতা গড়ে ওঠে।’’
শহরের এক সার্জিক্যাল দোকানের মালিক সোমনাথ সিংহ- সহ শহরের অনেকেই এই কাজের প্রশংসা করেছেন। মাস্ক বিক্রির ফাঁকে সোমনাথ বলছিলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের আতঙ্কে মাস্কের বিক্রিও একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। মেনুকার্ডে করোনা সচেতনতার বার্তা রাখার এমন উদ্যোগ অভিনব তো বটেই।’’