Coronavirus

এ বার করোনা আক্রান্ত এগরার এক বৃদ্ধ

গত ১২ মার্চ এগরার ওই চিকিৎসকের ছেলের বিয়েতে এসেছিলেন কলকাতার আক্রান্ত বৃদ্ধ। তাঁরা সম্পর্কে ভায়রাভাই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৮
Share:

করোনা আক্রান্তকে নিয়ে কলকাতায় রওনা দিল অ্যাম্বুল্যান্স। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল এগরায়। কলকাতার করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা এগরার চিকিৎসকের আরও এক আত্মীয়ের শরীরে মিলল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি। তাঁকে বুধবার সকালে কলকাতার বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই নিয়ে এগরায় করোনা যোগের সংখ্যাটা হল ৩। তবে এদিনই এগরায় বিয়েবাড়ির যোগে প্রথম করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে।

Advertisement

গত ১২ মার্চ এগরার ওই চিকিৎসকের ছেলের বিয়েতে এসেছিলেন কলকাতার আক্রান্ত বৃদ্ধ। তাঁরা সম্পর্কে ভায়রাভাই। কলকাতার বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছিলেন চিকিৎসকের এক জামাইবাবু (জ্যেঠতুতু দিদির স্বামী)। বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধের গত ৩০ মার্চ জ্বর-সর্দি-কাশি শুরু হয়। ওই দিনই তাঁকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। রাতে বৃদ্ধের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করতে কলকাতায় পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার রাতে সেই রিপোর্ট পান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যায়, বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত। ওই বৃদ্ধ ছাড়াও চিকিৎসকের পরিবারের আরও তিন জনের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

চিকিৎসকের জামাইবাবুর রিপোর্ট পজেটিভ আসার পরে মঙ্গলবার রাতেই তাঁর বৃদ্ধ স্ত্রীকে এগরা সুপার হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আইসোলেশনে রাখা হয়। আর এ দিন নতুন করে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে তাঁদের পরিচারিকাকে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে মোট ১৬ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন করে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধকে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বৃদ্ধের স্ত্রী ও বাড়ির পরিচারিকাকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, করোনায় নতুন আক্রান্ত বৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী। চিকিৎসকের বাড়ির ১০০ মিটার দূরে একই ওয়ার্ডে বাড়ি তাঁর। জানা গিয়েছে, কলকাতার আক্রান্ত বৃদ্ধ ভায়রাভাইয়ের ছেলের বৌভাতে হাজির ছিলেন ১৫ মার্চ। এর পরে তিনি গত ১৭ মার্চ অসুস্থ অবস্থায় গিয়েছিলেন দিঘায়। সেখানে বাড়াবাড়ি হতে ১৮ মার্চ ভায়রাভাইয়ের এগরার বাড়িতে ফেরেন। সেখানে ছিলেন ১৮ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই সময় ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন চিকিৎসকের জামাইবাবু। গত ২৫ মার্চ কলকাতার বৃদ্ধের করোনায় আক্রান্তের খবর সামনে আসে। তা শুনে এগরার ওই বৃদ্ধ হোম আইসোলেশনে থাকছিলেন। কিন্তু গত ৩০ মার্চ তিনিও অসুস্থ হন।

এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বিয়েবাড়ি এবং বৌভাতের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্য সাড়ে ৫০০ জনের বেশি মানুষের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা যায়নি। তাই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, দিঘা থেকে ফিরে চিকিৎসকের ভাইরাভাই যে ক’দিন এগরায় ছিলেন, সে সময়ই তাঁর সংস্পর্শে আসা অন্যেরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে চিকিৎসকের স্ত্রী এবং বৃদ্ধ পিসিমাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রের খবর, বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ৫৭২ জনের প্রথম দফায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর গৃহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। গত সোমবার দ্বিতীয় দফায় ফের তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে কারও শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়েনি। আপাতত তাঁদের ‘রিলিজ’ করে দেওয়া হয়েছে। তবে নিয়ম মেনে এখন সকলকেই বাড়িতেই থাকতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement