এই কর্মতীর্থেই রাখা হয়েছিল।
করোনার আতঙ্কে দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিগ-ই-জামাতের সমাবেশ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। খোঁজ মিলছে না জামাতের ওই সমাবেশে যোগ দেওয়া অনেকের। এ বার ওই জামাতের সমাবেশে যোগ দেওয়া ৭ বিদেশি মৌলবি-সহ ৯ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠাল প্রশাসন। মৌলবিদের সঙ্গে যে দু’জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে তাঁরা অনুবাদক। রাতে ওই ৯জনকে রাজারহাটে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণের সতকুঁই মসজিদ থেকে ওই ৯ জনকে বার করে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭জন ইন্দোনেশিয়া, ১ জন মুম্বই ও ১জন আসানসোলের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। রাতেই ওই ৯ জনকে খড়্গপুর-১ ব্লকের সতকুঁই কর্মতীর্থ চলা ব্লক কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে যায় গ্রামীণ থানার পুলিশ। বুধবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা গিয়ে ওই ৭ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। রাতে পাঠানো হয় রাজারহাটের কোয়রান্টিন সেন্টারে। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, আপাতত ওই ৯ জনের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা যায়নি। তবে বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিচ্ছে না জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। নিজামুদ্দিনের তবলিগ-ই-জামাতের সমাবেশে যোগ দেওয়ায় তাঁদের কোয়রান্টিনে রেখে সর্বক্ষণ নজরদারি চালানো হচ্ছে। শুধু সতকুঁই নয়, খড়্গপুর শহরের একাধিক মসজিদে দিন কয়েক ধরে ধর্মপ্রচার করেছেন ওই ৭ জন। এবং ধর্মপ্রচারের সময় তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন মুম্বই ও আসানসোলের দুই অনুবাদক। গত কয়েকদিন ধরে ওই ৯ জন কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা জানতে খোঁজ শুরু হয়েছে। গঠন করা হয়েছে চার সদস্যের একটি কমিটি। পুলিশ, স্বাস্থ্য দফতর, পঞ্চায়েত সদস্য ছাড়াও সতকুঁই মসজিদের ইমামকে ওই কমিটিতে রাখা হয়েছে। মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “আমরা স্থানীয়ভাবে জানতে পেরে পুলিশের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার ৭জন-সহ ৯জনকে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছি। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ৭জন গত কয়েকদিন কাদের সংস্পর্শে এসেছিল তার খোঁজ করছে ওই কমিটি। আমরা সতর্ক নজরদারি চালাচ্ছি।”
গত ১১ মার্চ ৭ জন মৌলবি ইন্দোনেশিয়া থেকে এসে দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিগ-ই-জামাতের সমাবেশে যোগ দেন। তাঁরা জামাতের সদস্য বলে জানা গিয়েছে। এর পরে দিল্লি থেকে পূর্বা এক্সপ্রেসে গত ১৭ মার্চ খড়্গপুরে পৌঁছন। স্টেশন থেকে শহরের মূল মসজিদে যান। এর পরে ওই দিনই পাঁচবেড়িয়ার ইমলিতলার বাইতুল আমান মসজিদে ধর্মপ্রচারে যান। গত ২০ মার্চ পাঁচবেড়িয়ার বালুবস্তির বিলাল মসজিদে যান তাঁরা। বেশ কয়েকদিন সেখানে ধর্মপ্রচারের পরে গত ২২মার্চ যান শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দার ইদগা মসজিদে। সেখানেও গত ২৬ মার্চ পর্যন্ত কাটিয়ে তাঁরা যান সতকুঁই মসজিদে। সেখানে এই করোনা সতর্কতা এড়িয়েই চলছিল ধর্মপ্রচার। মঙ্গলবার দিল্লির নিজামুদ্দিনের ঘটনা সামনে চলে আসায় তৎপর হয়ে সতকুঁই মসজিদে হানা দেয় পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “আমরা বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আপাতত করোনার উপসর্গ নেই। তবে পরেও যেহেতু উপসর্গ দেখা যেতে পারে তাই কোয়রান্টিনে রেখে নজরদারি চালানো হচ্ছে। কারা ওই মৌলবিদের সংস্পর্শে এসেছেন তার খোঁজ চলছে।”
অবশ্য এমন ঘটনায় আতঙ্কিত খড়্গপুর শহরের পাঁচবেড়িয়া এলাকার বহু মুসলিম পরিবার। পাঁচবেড়িয়ার বাসিন্দা শেখ সায়জাদা বলেন, “ওই সময়ে তো সকলেই ঘুরে বেড়িয়েছি। তাই সকাল থেকেই এলাকায় চর্চা চলছে। খুব আতঙ্কে রয়েছি।”