Corona

মাস্ক ছাড়াই প্রচারে, করোনার ভ্রূকুটি, ফের সচেতনতা অভিযানে স্বাস্থ্য দফতর 

প্রচার মিছিল, সভা, সমাবেশে যোগ দেওয়া আমজনতারও অনেকের মুখে মাস্কের বালাই নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২১ ০৬:১৫
Share:

বাম থেকে অবাম— প্রচারে প্রায় সব দলের নেতৃত্বেরই মুখ থাকছে মাস্কহীন। নিজস্ব চিত্র।

ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। সোমবারও জেলায় নতুন করে ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সারা রাজ্যে একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৮। তবে এই পরিস্থিতিতেও বিধানসভার ভোট-প্রচারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থেকে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সচেতনতার ছবি উধাও। সকলকেই মাস্কবিহীন অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

প্রচার মিছিল, সভা, সমাবেশে যোগ দেওয়া আমজনতারও অনেকের মুখে মাস্কের বালাই নেই। অসতর্কতার এমন ছবিতে ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। ফলে সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সচিব সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, যে সব হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছিল জরুরি ভিত্তিতে সেগুলির যন্ত্রপাতির মেরামতি-সহ পিপিই, গ্লাভস, মাস্ক মজুত রাখতে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বছর মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৭৭১ জন। এদের মধ্যে ২০ হাজার ৪৫৭ জন করোনা মুক্ত হয়েছে। করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৭৯ জনের। এখন করোনায় আক্রান্ত ৩৫ জন রয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন হোম কোয়ারান্টিনে আছে। পাঁশকুড়ায় বড়মা হাসপাতাল ও চণ্ডীপুরের মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা কমিয়ে করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু রাখা হয়েছে। তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল সহ সব মহকুমা হাসপাতাল ও ব্লক স্বাস্থ্কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশের পর পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় মঙ্গলবার সব সহকারী মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে করোনা বিষয়ে বৈঠক করেন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নির্দেশ দিয়েছেন করোনা নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করতে ফের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে হবে। প্রতিটি এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও পারস্পারিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন করার পাশাপাশি করোনা উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের দ্রুত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্ক ও কো-মর্বিডিটি থাকা ব্যক্তিদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া চলছে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সকলকেই সচেতন হতে হবে। এর জন্য রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ও জনসভা কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া মানুষের পাশাপাশি বাস, ট্রেন সহ জনবহুল জায়গায় মানুষকে করোনার সতর্কতা বিধি মেনে চলতে হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা ফের যাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝান সে জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনার উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত নমুনা পরীক্ষার জন্য জোর দেওয়া হয়েছে। জেলার সব হাসপাতাল ও প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া করোনায় আক্রান্তের চিকিৎসার জন্য হোম-কোয়রান্টিনে রাখা বা প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’’

দলের কর্মসূচিতে মাস্ক ব্যবহার না করার বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা তমলুক বিধানসভার প্রার্থী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘মাঝে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে ঢিলেঢালা মনোভাব এসেছে। যার জেরে সভা মিছিলে আসা লোকজনদের একাংশ মাস্ক ব্যবহার করছে না। তবে আমরা দলীয়ভাবে বোঝানো শুরু করেছি। এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনেরও নির্দেশিকা দেওয়া প্রয়োজন।’’ বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ ফের বৃদ্ধি পাওয়ায় সভা ও মিছিল করার ক্ষেত্রে দলের সমর্থকদের মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। সভা ও মিছিলে আসা সমর্থকদের দলের তরফেও মাস্ক দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement