শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ
দুর্গাপুজোয় টক্কর! একদিকে তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে বিজেপির দিলীপ ঘোষ।
আজ, বৃহস্পতিবার পঞ্চমী। পঞ্চমীতেই পুজো উদ্বোধনে টক্কর দেখতে চলেছে মেদিনীপুর। সংখ্যার বিচারে এগিয়ে রয়েছেন অবশ্য দিলীপই।
তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শিবিরে কান পেতে জানা গিয়েছে, শুভেন্দু এবং দিলীপ, দুই নেতার কাছেই না কি পুজো উদ্বোধনের একগুচ্ছ আবেদন গিয়েছিল। মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপের কাছে না কি ৬০টিরও বেশি আবেদন গিয়েছিল। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দুর কাছে না কি আবেদন গিয়েছিল ৪০টিরও বেশি। সময়ের অভাবে সব আবেদনে সাড়া দিতে পারেননি দু’জনই। দিলীপ পঞ্চমী এবং ষষ্ঠী, এই দু’দিনে জেলার প্রায় ৩০টি পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন। শুভেন্দু পঞ্চমীতে জেলার ৭- ৮টি পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন। বিজেপি শিবির জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার, পঞ্চমীতে ১৬টি পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন দিলীপ। ষষ্ঠীতে তিনি আরও ১৮টি পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন। বৃহস্পতিবার শুধু মেদিনীপুরেই ৮টি পুজোর উদ্বোধন করার কথা রয়েছে দিলীপের। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে ৩- ৪টি পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু যে পুজোগুলির উদ্বোধন করবেন, তারমধ্যে রয়েছে সংযুক্তপল্লি সর্বজনীন। সংযুক্তপল্লি সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা সুবীর সামন্ত বলেন, ‘‘আমরা পুজোর উদ্বোধনে শুভেন্দুদাকে চেয়েছিলাম। উনি আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।’’ দিলীপ যে পুজোগুলির উদ্বোধন করবেন, তার মধ্যে রয়েছে শরৎপল্লি সর্বজনীন। শরৎপল্লি সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জয় হাজরা বলেন, ‘‘আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম। দিলীপদা আমাদের পুজোর উদ্বোধনে আসছেন। আমরা খুব খুশি।’’
পুজো কমিটির দখল ঘিরে তৃণমূল, বিজেপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। মেদিনীপুরে অবশ্য এমন ঘটনা ঘটেনি। তবে টক্কর রয়েছে। এ বার পাড়ায় পাড়ায় ছোট পুজোগুলিকে হাতিয়ার করেও ‘পুজো রাজনীতি’- তে ঢুকে পড়েছে গেরুয়া- শিবির। শহরের বেশ কিছু পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিজেপির নেতারা।
বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের খোঁচা, ‘‘দুর্গাপুজো নিয়ে তৃণমূলের জমিদারি চালানোর দিন শেষ!’’ তৃণমূল মনে করছে, রাজনীতির সঙ্গে পুজোকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। আমবাঙালি তা মেনে নেবেন না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোয় রাজনীতির রং দিতে চাইছে বিজেপি। আমরা মনে করি, দুর্গাপুজো এমন একটা পুজো যা দখল করা যায় না। এ রকম সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কেন ওরা নিয়ে এল জানি না! বুঝতেও পারছি না!’’ শমিত আবার বলেন, ‘‘এটা পুজো কমিটি দখলের বিষয় নয়। কিন্তু সব কিছু জোর করে দখলে রাখব, ওদের এই মানসিকতাও ঠিক নয়।’’
জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘শুভেন্দুদাকে আরও অনেক জায়গায় যেতে হবে। সময়ের অভাবেই দাদা এ জেলায় বেশি উদ্বোধন করতে পারছেন না। মেদিনীপুরেরই ১৯টি পুজো দাদাকে চেয়েছিল।’’ জেলা বিজেপির এক নেতার দাবি, ‘‘সবে দিলীপদা সাংসদ হয়েছেন। এ বারই ৬০টিরও বেশি উদ্বোধনের আবেদন ওঁর কাছে এসেছে। এটা তো ট্রেলার! পুরো ফিল্ম পরের বছর দেখা যাবে! সরকারি অনুদান হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে ইচ্ছে থাকলেও বেশ কিছু পুজো কমিটি দিলীপদাকে ডাকেনি। পরের বছর ওই ভয়টা কেটে যাবে!’’ সব দেখে জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান বলেন, ‘‘পুজোর উদ্বোধনে বিজেপি কী ভাবে এতটা এগিয়ে গেল, আমিও বুঝতে পারছি না!’’