লকডাউনে তালাবন্ধ মেদিনীপুর শহরের বড়বাজার। নিজস্ব চিত্র
জেলায় দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। ইতিমধ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা এক হাজার পেরিয়েছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে পশ্চিম মেদিনীপুরে বাড়ানো হল গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বা কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা। জেলায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা একশো পেরিয়েছে। দিন কয়েক আগেও জেলায় এমন জ়োনের সংখ্যা ছিল ৮৬টি। তা বেড়ে হয়েছে ১২৯টি।
জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘জেলায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। নতুন করে কয়েকটি এলাকা সংযোজিত হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট জ়োনে আরও নজরদারি চলার ফলে সংক্রমণ ঠেকানোর ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’’ আরও নতুন জায়গায় সংক্রমণের খবর মেলায় জেলা প্রশাসনের এক সূত্র আগেই জানিয়েছিল কন্টেনমেন্ট জ়োন বাড়তে পারে। মঙ্গলবার কন্টেনমেন্ট জ়োন বৃদ্ধির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক এবং ৭টি পুর- এলাকা রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ব্লক এলাকাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি কন্টেনমেন্ট জ়োন রয়েছে দাসপুর- ১ এবং ২ তে। দাসপুর- ১ এ ১৬টি, দাসপুর- ২ এ ১৭টি। পুর- এলাকাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি কন্টেনমেন্ট জ়োন রয়েছে খড়্গপুর শহরে, ২৯টি। করোনা মোকাবিলায় সম্প্রতি জেলাস্তরে এক বৈঠকও হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। স্যানিটাইজ়িংয়ের কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে। সংক্রমিতের বাড়ি বা আবাসন চত্বর জীবাণুমুক্ত করা, সেখানকার অন্য বাসিন্দাদের শারীরিক অবস্থার উপরে নজর রাখা ও প্রয়োজনে তাঁদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে। কোয়রান্টিনে থাকা লোকজন যাতে বাড়ি থেকে না- বেরোন, সেদিকে বিশেষ নজর রাখার কথা জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি বজায় রাখা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মতো নিয়মগুলি মেনে চলার ফলে কিছু এলাকায় সংক্রমণ অনেকটা আটকানো সম্ভব হয়েছে। অন্তত করোনা পরীক্ষার হারের তুলনায়।’’ এক সময়ে পরিযায়ী শ্রমিক সূত্রে ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর প্রভৃতি এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। পরে খড়্গপুর, ডেবরা, সবং, চন্দ্রকোনা রোড (গড়বেতা- ৩) প্রভৃতি এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে। জেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্রের দাবি, কিছু এলাকায় এখনও অনেক মানুষই বিধি মেনে চলছেন না। তার জেরেই বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। খড়্গপুর-সহ জেলার একাধিক এলাকায় আংশিক লকডাউন শুরু হয়েছে। যে ভাবে শহরে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে আংশিক লকডাউনের দিন আরও বাড়ানো হতে পারে।