রিতেশ রায়।—নিজস্ব চিত্র
কাঁথি ৩ ব্লকের এক তৃণমূল নেতার নিখোঁজের ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই নেতাকে অপহরণ করেছে বিজেপি। বিজেপির পাল্টা দাবি, এটা পুরোপুরি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।
পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ তৃণমূল নেতার নাম রিতেশ রায়। তিনি তৃণমূলের কাঁথি-৩ ব্লকের দুরমুঠ অঞ্চলের চাঁদবেড়িয়া বুথের সভাপতি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি নিখোঁজ। তাঁর মোবাইল ফোনের সুইচ অফ। তাঁর স্ত্রী মহুয়া রায় ৯ ফেব্রুয়ারি মারিশদা থানায় স্বামীর নিখোঁজের ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ জানুয়ারি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ যেখানে সভা করেছিলেন তার ঢিলছোড়া দূরত্বে ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি। সভার পর বিজেপির কর্মীরা চাঁদবেড়িয়ায় তৃণমূলের পার্টি অফিস ভেঙেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় রিতেশ পার্টি অফিসে ছিলেন। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম সম্পাদক কনিষ্ক পণ্ডা বলেন, “২৯ তারিখ বিজেপির কর্মীরা তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙার সময় রিতেশ বাধা দিয়েছিল। সেই ঘটনার বদলা নিতেই রিতেশকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’
রিতেশের পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ রিতেশের মোবাইলে একটি ফোন আসে। তারপর তিনি সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্ত্রীকে বলেন, শৌভিক চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করার জন্য কোলাঘাটে যাচ্ছেন। ওই দিন রাত সাড়ে নটা নাগাদ রিতেশ স্ত্রীকে ফোন করেন। তখন তিনি জানান, শৌভিকের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই তাঁকে নিয়ে মালদা যাচ্ছেন।
রিতেশের স্ত্রী মহুয়া বলেন, ‘‘৮ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে স্বামীকে ফোন করলে তাঁর মোবাইলের সুইচ অফ ছিল। এখনও পর্যন্ত মোবাইলের সুইচ অফ রয়েছে। যে শৌভিক চক্রবর্তীর সঙ্গে স্বামী দেখা করতে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন, তাঁকে ফোন করলে তাঁর ফোনও সুইচ অফ রয়েছে। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পর আমরা এই ঘটনায় আরও আতঙ্কিত।’’
বিজেপির কাঁথি শহর (নগর মণ্ডল) সভাপতি মহেশ সুর বলেন, “বিজেপি দল এই ধরনের সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। এই নিখোঁজের ঘটনার সঙ্গে বিজেপি দলের কোন যোগ নেই। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হতে পারে।’’
কাঁথির এসডিপিও পার্থ ঘোষ বলেন, “অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’