—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
তিন বছর আগে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে বরাদ্দ করা রেশন এখনও পর্যন্ত দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বণ্টন করা হয়নি বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এগরা-২ ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৯১ জন উপভোক্তাদের রেশন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
গত বছর ১১ ডিসেম্বর মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধান তথা কৃষক নেতা প্রকাশ রায়চৌধুরী মহকুমাশাসকের কাছে বঞ্চিত রেশন উপভোক্তাদের হয়ে অভিযোগ করেন। ফল হয়নি। প্রকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ত্রাণের এই রেশন জেলা প্রশাসন বরাদ্দের পরেও এগরা-২ ব্লকে উপভোক্তাদের তিন বছর ধরে বঞ্চিত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। অনেকে এই রেশন না পেয়ে অনাহারে মারা গিয়েছেন। মহকুমাশাসকের কাছে বকেয়া এই রেশন চেয়ে আবেদন জানিয়েছি।’’ এগরা মহকুমাশাসক মনজিৎ কুমার যাদব বলেন, ‘‘এই রেশন না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ এসেছিল। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনও উপভোক্তা রেশন থেকে বঞ্চিত থাকবেন না।’’
একাধিক বার ব্লক ও মহকুমাশাসকের দফতরে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া বলেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। সেই রেশনের বৈধ দাবিদারদের অনেকের ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও খাদ্য সঙ্কটের সময় অসহায় মানুষদের জন্য এই ত্রাণ দিয়ে থাকে রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। গত ২০২১ সালে ১১ জুন জেলা প্রশাসন চারটি মহকুমার জন্য ত্রাণের রেশন বরাদ্দ করা হয়। সেই মতো জেলা প্রশাসনের তরফে চারটি মহকুমা দফতরের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগকে নির্দেশ পাঠানো হয়। এগরা মহকুমায় এগরা-২ ব্লক ছাড়া বাকি সমস্ত ব্লক সেই সময় ত্রাণের রেশনের গম বন্টন করে বলে দাবি। একমাত্র এগরা-২ ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৯১ জন উপভোক্তা সেই রেশন পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত তিন বছর ধরে হতদরিদ্র উপভোক্তারা পঞ্চায়েত অফিস থেকে শুরু করে রেশন ডিলারদের বাড়ি— সর্বত্র ঘুরেও রেশন পাননি। এরই মধ্যে এগরার মল্লিকপুর মৌজায় উপভোক্তা বছর তিপান্নের কিশোরী মাইতির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গিয়েছেন কিশোরী। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ১১ জুন জেলা প্রশাসনের নির্দেশের পরেই এগরা মহকুমা দফতর এগরা-২ ব্লকে ১৪জুন ২৮৮.৫২ কুইন্টাল রেশন বরাদ্দ করে। ব্লক প্রশাসন উপভোক্তাদের জন্য সেই বছর রেশন বরাদ্দ করে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট রেশন বিতরণ সংস্থার থেকে বরাদ্দ রেশন ডিলারদের কাছে এসে পৌঁছায়নি।