Pankura Market

কৃষক বাজারে বাজির দোকান! আপত্তি

পাঁশকুড়া কৃষক বাজারের স্টলগুলি বাজি কারবারিদের বিলি করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসন। সেই উদ্দেশ্যে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা কৃষক বাজার পরিদর্শনে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বছর খানেক আগে পুজোর সময় বাজি বিস্ফোরণ ঘটেছিল সাধুয়াপোতায়। প্রাণ গিয়েছিল দু’জনের। বছর ঘুরে এসেছে আরও একটি পুজোর মরসুম। এবার ওই সাধুয়াপোতা এবং পড়শি গ্রাম পশ্চিম চিল্কার একাধিক ব্যক্তিকে সবুজ বাজি বিক্রির লাইসেন্স দিল প্রশাসন।প্রাথমিকভাবে পাঁশকুড়া কর্মতীর্থ এবং পাঁশকুড়া কৃষক বাজারে বাজি বিক্রির স্টল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসন। তবে দুই জায়গাতেই যেমন বাজি বিক্রি নিয়ে আপত্তি উঠেছে, তেমনই সবুজ বাজিটা ঠিক কী, তা নিয়েও ধন্দ কাটেনি।

Advertisement

গত বছর অক্টোবরে পাঁশকুড়ার সাধুয়াপোতা গ্রামে শ্রীকান্ত ভক্তা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণে দু'জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর সাধুয়াপোতা, পশ্চিম চিল্কা গ্রামে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। আপাতত ওই সমস্ত গ্রামে বাজির কারবার বন্ধ রয়েছে।সম্প্রতি এগরার খাদিকুল এবং দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর সবুজ বাজি তৈরি এবং বিক্রির বৈধ লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। রাজ্যের আড়াই হাজার জনকে সবুজ বাজি বিক্রির লাইসেন্স দিয়েছে রাজ্য। কারখানার অনুমোদন মিলছে ৫০টি।আড়াই হাজার বিক্রেতার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে রয়েছেন ১৮৪ জন। জেলার ১৬০ জনের আবেদন বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। বিদ্যুৎ দফতর এবং দমকলের ছাড়পত্র না মেলায় জেলায় ৫৫টি আবেদন বাতিল হয়েছে। লাইসেন্স প্রাপ্ত বিক্রেতাদের মধ্যে সাধুয়াপোতা এবং পশ্চিম চিল্কার পাঁচজন রয়েছেন।

সবুজ বাজি বিক্রির লাইসেন্স মিললেও, সেগুলি কোথায় বিক্রি করা হবে তা নিয়ে ফাঁপরে পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসন। প্রথম পর্যায়ে ঠিক হয় পাঁশকুড়া দমকল ভবনের পাশে সরকারি কর্মতীর্থ ভবনের স্টল বাজির বিক্রির জন্য বিলি করা হবে। কর্মতীর্থে বাজি বিক্রির সরকারি সিদ্ধান্তে আপত্তি জানান কর্মতীর্থের ব্যবসায়ীরা। পাঁশকুড়া কর্মতীর্থের সম্পাদক শেখ আব্দুল রহিম বলেন, ‘‘কর্মতীর্থটি লোকালয়ের মধ্যে অবস্থিত। এখানে বাজির দোকান হলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকবে। আমাদের দাবি স্মারকলিপি আকারে পাঁশকুড়ার বিডিওর কাছে জমা দিয়েছি।’’

Advertisement

এরপর পাঁশকুড়া কৃষক বাজারের স্টলগুলি বাজি কারবারিদের বিলি করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসন। সেই উদ্দেশ্যে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা কৃষক বাজার পরিদর্শনে যান। সেখানেও আপত্তি জানায় রেগুলেটেড মার্কেট কমিটি।পাঁশকুড়া কৃষক বাজারের ইনচার্জ জাকির হোসেন বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসন কৃষক বাজারে বাজির স্টল করতে চেয়েছিলেন। আমরা আপত্তি জানিয়েছি। কৃষক বাজারের সাথেও রয়েছে ব্লক কৃষি অফিস। এখানে প্রতিদিন কৃষকদের যাতায়াত রয়েছে। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’’

আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, ‘‘কৃষক বাজারগুলিতে বাজির স্টল করার ব্যাপারে কৃষকদের আপত্তি রয়েছে। রাজ্যের সর্বত্র সরকারি কর্মতীর্থ ভবনে সবুজ বাজি বিক্রি করা হবে। এটাই প্রশাসনিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’’ পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনদুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘বাজি বিক্রি কোথায় হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা চলছে।’’

স্বাভাবিক ভাবেই লাইসেন্স মিললেও বাজি বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। আর সবুজ বাজি কী, তা নিয়ে ধন্দেও তাঁরা। সূত্রের খবর, এ রাজ্যে বিক্রিত মোট বাজির ৬০ শতাংশ আসে তামিলনাড়ু থেকে। লাইসেন্স পাওয়ার পর ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে বাজি কেনার জন্য অনলাইন বুকিং সেরে ফেলেছেন। পশ্চিম চিল্কা গ্রামের প্রবীর মাইতি বলেন, ‘‘যাঁদের বাড়িতে বাজি বিক্রির অনুমতি নেই, তাঁদের পাঁশকুড়া কৃষক বাজারে স্টল দেওয়া হবে বলে আমাদের ব্লক প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছিল। সেই মতো সবুজ বাজি বাজির অনলাইন বুকিং সেরে ফেলেছি। এখন শুনছি কৃষক বাজারে স্টল দেওয়া হবে না।সরকারি স্টল না মিললে আমরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement