জলমগ্ন মাঠ। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ষার ভারী বৃষ্টি এখনও শুরু হয়নি। অথচ প্রায় দু'মাস ধরে জলমগ্ন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির স্মৃতি বিজড়িত পাঁশকুড়ার পূর্ব চিল্কা লালচাঁদ হাইস্কুলের খেলার মাঠ। স্থানীয়ের একাংশ বাঁধ দিয়ে নিকাশি বন্ধ করে দেওয়ায় এই বিপত্তি বলে অভিযোগ। আপাতত, খেলা বন্ধের পাশাপাশি, হাঁটু প্রমাণ জমা জলে বাড়ছে মশার উপদ্রব। অভিযোগ জানানো হয়েছে প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে।
পাঁশকুড়ায় নামকরা যে কয়েকটি স্কুল রয়েছে, সেগুলির মধ্যে অন্যতম পূর্ব চিল্কা লালচাঁদ হাইস্কুল। স্কুলের সামনে রয়েছে বিশাল একটি খেলার মাঠ। পড়ুয়াদের নিত্যদিনের খেলার পাশাপাশি, এই মাঠে আন্তঃশ্রেণি এবং লিগ পর্যায়ের ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। স্কুলের বহু প্রাক্তনী সেনাবিভাগ এবং পুলিশে কর্মরত। তাঁদের প্রত্যেকেই এই মাঠে অনুশীলন করতেন। এলাকার তরুণরাও প্রতিদিন ভোর থেকে এই মাঠে শরীরচর্চা করেন। এক সময় প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও এই মাঠে ক্রিকেট খেলে গিয়েছেন। সেই মাঠই প্রায় দু'মাস ধরে জলমগ্ন। প্রায় হাঁটু প্রমাণ জল জমে রয়েছে মাঠে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাই স্কুল সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার জল স্কুলের মাঠ দিয়ে বয়ে গিয়ে একটি পুকুরে পড়ে। অভিযোগ, স্থানীয় কিছু বাসিন্দা স্কুলের জল নিকাশির জায়গা বাঁধ দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন। ফলে নিকাশি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেও এলাকার জল এসে জমা হচ্ছে স্কুলের মাঠে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম কুমার দাস বলেন, ‘‘কেউ বা কারা বাঁধ দিয়ে নিকাশি বন্ধ করে দিয়েছে। ফল মাঠ দু'মাস ধরে জলমগ্ন। জল জমে থাকায় ছাত্রছাত্রীরা টিফিনের সময় ক্লাসেই কার্যত থাকছে। জমা জলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মশার উপদ্রব বেড়েছে।’’
সুরাহা চেয়ে শিক্ষা দফতর সহ জেলা প্রশাসনের সমস্ত বিভাগে এ নিয়ে আবেদন জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সুরাহা হয়নি। প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানিয়েছি। স্থানীয় বিধায়কের প্রতিনিধি স্কুলে এসেছিলেন বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে। কিন্তু এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।’’ এখনও বর্ষার ভারী বৃষ্টি শুরু হয়নি। স্কুলের একতলায় রয়েছে মিড ডে মিলের গুদাম ঘর, ল্যাবরেটরি, বিদ্যুৎ ঘর, বৃত্তিমূলক শিক্ষা কর্মশালা কক্ষ সহ আরও অনেক কিছু। নিকাশি সচল না করলে স্কুল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ভারী বৃষ্টিতে স্কুলের নীচের তলা জলমগ্ন হয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র বলছেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলব স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে।’’ পাঁশকুড়ার বিডিও অমিত কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে মাঠটি পরিদর্শনে যাব। নিকাশি সচল করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’