অকেজো পথবাতি। নিজস্ব চিত্র
রাস্তার পাশে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের সারি। ঠিকঠাক জ্বলছে অবশ্য গোটা কয়েক। তিন বাতির স্তম্ভগুলির কোনওটায় দু’টি, কোনওটায় একটি, কোনওটায় আবার একটি বাতিও জ্বলছে না। অনেক বাতির ব্র্যাকেট উধাও।
ছবিটা শহর মেদিনীপুরের কেরানিতলা থেকে বটতলাচক রাস্তার। অবশ্য শুধু শহরের এই রাস্তার নয়, অনান্য রাস্তার পাশে থাকা ত্রিফলারও একই হাল। অভিযোগ, বাতিস্তম্ভের ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। তাই এই পরিস্থিতি। সব দিক দেখে পুজোর আগে ওই বাতিগুলির হাল ফেরানোর আশ্বাস দিচ্ছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘শহরের কিছু জায়গায় ত্রিফলা খারাপ হয়ে যাওয়ায় খবর পেয়েছি। পুজোর আগে মেরামত হবে।’’
বছর কয়েক আগে শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তার পাশে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ বসানো হয়। শুরুর দিকে বাতিগুলি ঠিকঠাক ছিল। ক্রমে ক্রমে অকেজো হয়ে পড়ে। কিছু বাতিস্তম্ভ ধীরে ধীরে এক ফলা, দু’ফলা বা নিস্ফলা হয়ে গিয়েছে! কিছু বাতি চুরিও গিয়েছে। অভিযোগ, বেহাল বাতিগুলি সারানোর ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই পুরসভার। শহরের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খানের কথায়, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণের দিকে নজর নেই। তাই ত্রিফলার বেশিরভাগই খারাপ হয়ে রয়েছে। এগুলি ঠিক ভাবে দেখাশোনার জন্য পুর-পরিকাঠামোও নেই।’’ দেখভালের পুর-পরিকাঠামো না গড়ে শহরে এমন বাতিস্তম্ভ বসানো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। পুর-প্রশাসক দীননারায়ণের অবশ্য দাবি, ‘‘নতুন এই আলো শহর মেদিনীপুরকে সাজিয়ে তুলেছে। শহরের সৌন্দর্য অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।’’
মেদিনীপুর শহরে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ কম নেই। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে রাস্তার পাশে ৩৭২টি ত্রিফলা রয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পুজোর আগে বাতিহীন ত্রিফলায় বাতি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, শহরকে আলোকিত করতে আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নতুন করে শহরে ২৫০টি এলইডি আলো লাগানো হবে। মেদিনীপুরে ২৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। ওয়ার্ডপিছু ১০টি করে এলইডি লাগানো হচ্ছে। মেদিনীপুরের এক পুর-আধিকারিক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে এ কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে পথবাতির প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে এলইডি লাগানো হচ্ছে।’’ শহর জুড়ে ২৫টি লো-মাস্ট বাতিস্তম্ভ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শহরের রাঙামাটি উড়ালপুল আরও আলোকিত করা হবে। শহরের গাঁধীঘাটে বাতিস্তম্ভ বসানো হবে। পুর- কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শহরে যথেষ্ট সংখ্যক পথবাতি রয়েছে। কোথাও বাতি খারাপ থাকার খবর পেলে তা আলো বিভাগকে জানানো হয়। আলো বিভাগের বক্তব্য, দ্রুত বাতি মেরামতের চেষ্টা হয়। কখনও কখনও প্রয়োজনীয় মালপত্র থাকে না। সে ক্ষেত্রে দ্রুত তা সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। ফলে, তড়িঘড়ি বাতি মেরামতও হয় না।
পুজোর আগে বেহাল ত্রিফলার হাল কতটা ফেরে, সেটাই দেখার!