করোনা সচেতনতা মেনে ছন্দে ফেরার চেষ্টায় বাজার। নিজস্ব চিত্র
করোনা পরিস্থিতির শুরুতে শিল্পশহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাখনবাবুর বাজার নিয়ে উদ্বেগ ছিল সর্বস্তরে। নিত্যদিন কয়েক হাজার মানুষ বাজার করতে আসতন। অভিযোগ ছিল, বারবার বলা সত্ত্বেও বাজারে কোনওরকম করোনা সতর্কতা বিধিই মানা হচ্ছিল না।
পুরসভার তরফে ঘোষণার পরেও বাজার হেলিপ্যাড মাঠে সরানো যায়নি। বর্তমানে লকডাউন উঠলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং মাস্ক ব্যবহার করে বাইরে বেরোনোর বিষয়ে প্রশাসনের তরফে সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলা হলেও মাখনবাবুর বাজাকে কার্যত কোনও সতকর্তা ছিল না বলে অভিযোগ। তার প্রেক্ষিতে দুটি বিজ্ঞান সংগঠন, স্থানীয় চারটি বাজার কমিটির প্রধান ও পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে রবিবার অভিযান চালানো হয় মাখনবাবুর বাজারে।
ছুটির দিন থাকায় সকাল থেকেই মাছবাজার, মাংস বাজার এবং আনাজের বাজারে ঠাসা ভিড় ছিল। সে কারণে সকাল থেকেই বিজ্ঞানকর্মীরা পথে নামেন। পথচলতি মানুষকে সচেতন করেন। বিভিন্ন দোকানদারের হাতে মাস্ক ও করোনা ক্যাপ তুলে দেওয়া হয়। ঘোষণা করা হয়, এই বাজারটি মডেল বাজার হিসেবে চিহ্নিত করা হল। অর্থাৎ বাজারে মাস্ক ছাড়া ক্রেতা এবং বিক্রেতা ঢুকতে পারবেন না। এদিন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাফাই কর্মীদের ফুল দিয়ে এবং নানা সামগ্রী দিয়ে সংবর্ধনা দেন বিভিন্ন বিজ্ঞান সংগঠনের কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের পক্ষে সুচিস্মিতা মিশ্র, অঞ্জন কুন্ডু প্রমুখ। সংগঠনের কর্মী বৈদ্যনাথ ঘোষ জানান, শুধু আজকের দিন নয়, বাজার চত্বর যাদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে সেই সাফাই কর্মীরা যাতে প্রয়োজনীয় পানীয় জল বিনামূল্যে পেতে পারেন সে জন্য বিভিন্ন ওয়াটার এটিএম কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এসেছেন।
এদিন বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে সিভিক ভলান্টিয়ারদে হাতে মাস্ক দেওয়া হয়। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদাস ঘটক জানান, বহু মানুষ এই বাজারে আসেন। নিয়ম মানা হয় না। যাতে বাজারে মাস্ক পরে, বিধি মেনে কেনা বেচা চলে সে জন্যই এই অভিযান। পুরসভার সাফাই সুপারভাইজার প্রতাপ মাইতি বলেন, ‘‘সাফাইকর্মীদের যে সম্মান দেওয়া হল তার মর্যাদা রাখার চেষ্টা করব।’’ বাজার কমিটির পক্ষে স্বপন শী জানান, মডেল বাজারের মর্যাদা বজায় রাখতে হবে। তবে একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে স্যানিটাইজ়ার টানেল নিয়ে। বাজারে ঢোকার দুদিকে দুটি টানেল বসেছিল। এখন শুধু কাঠামোই পড়ে আছে টানেলের। টানেলের ভিতরে বসছে বাজারও।