ডেঙ্গি রুখতে পথে এ বার কলেজ পড়ুয়াও

‘কাকিমা, বাড়ির সামনে জল জমতে দেবেন না। নর্দমায় আবর্জনা ফেলবেন না। জমা জলে ডেঙ্গির মশা জন্মায়। নোংরা-ঝোপে মশা বাড়ে।’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৫
Share:

ছড়ানো হচ্ছে স্প্রে। —নিজস্ব চিত্র।

‘কাকিমা, বাড়ির সামনে জল জমতে দেবেন না। নর্দমায় আবর্জনা ফেলবেন না। জমা জলে ডেঙ্গির মশা জন্মায়। নোংরা-ঝোপে মশা বাড়ে।’

Advertisement

অপরিচিত তরুণদের মুখে এমন কথা শুনে কিছুটা হতচকিত পাতরপাড়ার গৃহবধূরা। সমীর, রণজিত, রাহুল, পীযূষরা ততক্ষণে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। সকলেই কলেজ পড়ুয়া। তাঁদের কারও মুখে মাস্ক, হাতে মশানাশক স্প্রে করার যন্ত্র। কোদাল দিয়ে নোংরা সরিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে মশানাশক। দ্রুত হাতে উপড়ে ফেলা হচ্ছে আগাছার শিকড়। বাসিন্দাদের কারও জ্বর হয়েছে কি-না লিখে নেওয়া হচ্ছে সেই তথ্যও। অরণ্যশহরের বাসিন্দাদের ডেঙ্গি নিয়ে হাতে কলমে সচেতন করতে পথে নেমেছেন ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের একদল পড়ুয়া।

গত বুধবার থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পড়ুয়াদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই সাফাই অভিযান কর্মসূচি। পড়ুয়াদের সঙ্গে সাফাই অভিযানে হাত লাগিয়েছেন টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম শহর সভাপতি আর্য ঘোষ ও তাঁর সংগঠনের সদস্যরাও। সূত্রের খবর, শহরের ৭ জন বাসিন্দা ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুরসভার কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল। মশা মারতে তাই বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের দিয়ে মশানাশক স্প্রে করানো হচ্ছে।

Advertisement

ইতিমধ্যে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ, রাজ মহিলা কলেজ এবং আইটিআই চত্বরে সাফাই অভিযান চালানো হয়েছে। টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম শহর সভাপতি আর্য ঘোষ বলেন, “কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে আমরা শহরবাসীকে হাতে কলমে নিরন্তর সচেতন করে চলেছি। অন্যরাও এভাবে এগিয়ে এলে মশার সমস্যা অনেকটাই লাঘব হয়ে যাবে।” প্রচারে কাজও হচ্ছে। শহরবাসী সুচিত্রা নায়েক, বিশ্বজিৎ সিংহদের বক্তব্য, “ছেলেগুলো এসে বাড়ির সামনের নোংরা সাফ করে দিয়েছে। ওদের দেখে আমরাও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখছি।” ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত বলেন, “ছাত্রদের এই উদ্যোগে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। ওদের শুভেচ্ছা।”

ঝাড়গ্রামের উপ-পুরপ্রধান শিউলি সিংহ বলেন, “পুরসভার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মীরা কাজ করছেন। পড়ুয়ারাও এগিয়ে এসেছেন। নিঃসন্দেহে ভাল পদক্ষেপ।” ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, “এটাই তো নাগরিক সচেতনতার লক্ষণ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement