Cinema hall

দর্শক কই! খুলেও বন্ধ সিনেমা হল

প্রেক্ষাগৃহ খোলার অনুমতি মিলতেই দ্রুত স্যানিটাইজ় করে খোলা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরেরই চণ্ডীপুরের ‘মণিহার’ সিনেমা হল। তারপর থেকে যথাক্রমে হিন্দি ছবি ‘মরজাঁওয়া’, বাংলা ছবি ‘এসওএস কলকাতা’ এবং ‘চলো পটল তুলি’ চালানোর পরে আপাতত হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

টানা সাত মাস বন্ধ থাকায় খারাপ হয়ে গিয়েছে প্রজেক্টর মেশিন। গত মাসের মাঝামাঝি সরকারের তরফে হল খোলার অনুমতি পেয়ে তাই প্রজেক্টর সারানোর তোড়জোর শুরু করেছিলেন হল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আশপাশের হলের ‘মাছি মারা’ দশা দেখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের ‘শ্যামাশ্রী’ হল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

প্রেক্ষাগৃহ খোলার অনুমতি মিলতেই দ্রুত স্যানিটাইজ় করে খোলা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরেরই চণ্ডীপুরের ‘মণিহার’ সিনেমা হল। তারপর থেকে যথাক্রমে হিন্দি ছবি ‘মরজাঁওয়া’, বাংলা ছবি ‘এসওএস কলকাতা’ এবং ‘চলো পটল তুলি’ চালানোর পরে আপাতত হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কর্মীরা জানাচ্ছেন, একটা গোটা সপ্তাহে সব শো মিলিয়ে সাকুল্যে ২০ জন সিনেমা দেখতে এসেছিলেন।

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার ‘রয়্যাল’ সিনেমা হলের মালিকের তো দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। এই হলে শো চালু থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে কতদিন এ ভাবে হল খোলা রাখা সম্ভব হবে বুঝতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পূর্ব হোক বা পশ্চিম মেদিনীপুর, মাল্টিপ্লেক্স হোক কিংবা সিঙ্গল স্ক্রিন— চিত্রটা একই! আপাতত জেলায় করোনা সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বড় রকমের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জেলার সিনেমা হলের মালিকেরা। প্রেক্ষাগৃহ খোলার অনুমতি পেলেও খোলেনি মেদিনীপুর শহরের ‘হরি’ সিনেমা হলটি। হলের এক কর্মী তাপস সাউ বলছিলেন, ‘‘যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে কেউ প্রেক্ষাগৃহে আসবেন না। তাই হল খুললেও খরচ উঠবে না। আগামী বছর জানুয়ারি মাসে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

বিগ বাজেটের কোনও হিন্দি ছবি না এলে হল খোলা হবে না, সাফ জানাচ্ছেন খড়্গপুরের ‘বম্বে সিনেপ্লেক্স’-এর মালিক অশ্বিন গোকুলদাস। বলছিলেন, ‘‘রেলশহরে হিন্দি ছবির বিরাট বাজার রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে কোনও হিন্দি ছবি মুক্তি পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে হল খুললেও দর্শক আসবেন না।’’ একই মত ‘প্রিয়া এনটারটেনমেন্ট’-এর কর্ণধার অরিজিৎ দত্তেরও। তিনি বলছিলেন, ‘‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। যদি কোনও বিগ বাজেট মুক্তি না পায়, তা হলে হল বন্ধই রাখতে হবে। কিছু করার নেই।’’ প্রসঙ্গত, হলদিয়ার ‘বায়োস্কোপ’-এর মালিক অরিজিৎই।

করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় বেশি সমস্যায় পড়েছেন হল মালিকরা। চন্দ্রকোনার ‘রয়্যাল’ সিনেমার পক্ষে অঞ্জন গোস্বামী বলেন, ‘‘স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় দর্শক সংখ্যা কমেছে। এখন সারা দিনে দু’টো শো চালাচ্ছি। প্রতিটি শোতে ১০-১২ জন থাকছেন। স্বাভাবিক অবস্থায় ৫০-৬০ জনের মতো দর্শক পেতাম।’’ তিনি আরও জুড়ছেন, ‘‘হল চালাতে প্রতিদিন ২৫০০ টাকার কাছাকাছি ব্যয় হচ্ছে। আর টিকিট বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দেড় হাজার টাকার। অর্থাৎ প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকার লোকসান হচ্ছে।’’ করোনা পরিস্থিতিতে হল খুললেও দর্শক সংখ্যা যে কমেছে, সে কথা মানছেন হলদিয়ার চৈতন্যপুরের ‘উপহার’ সিনেমার মালিক প্রণব মণ্ডলও। বলছিলেন, ‘‘দর্শক সংখ্যা আগের মতো হচ্ছে না। তবে লাভ-লোকসানের কথা বললে, কোনওটাই হচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement