মেদিনীপুর শহরে মাটির প্রদীপের চাহিদা এখন তুঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের আগেই মেদিনীপুর শহরে তৈরি হয়ে গিয়েছে রামমন্দির। আর তার পরেই এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে মাটির প্রদীপের চাহিদা। আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে সবাই ছুটছেন মাটির প্রদীপ কিনতে। অবস্থা এমনই যে প্রদীপের চাহিদা মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কুমোরেরা। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘এ যেন অকাল দীপাবলি।’’ অন্য দিকে, অসময়ে ‘লাভের আলো’র প্রত্যাশায় কাজ করে চলেছে মেদিনীপুরের কুমোরপাড়া।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে এ রাজ্যের নানা জায়গায় পুজোয় ব্যবহৃত নানা জিনিস এমনকি গীতার বিক্রিও বেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কলকাতার কুমোরপাড়াগুলো থেকে তো লরি-লরি প্রদীপ বারাণসী-সহ উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গায় যাচ্ছে। তবে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যেও যে উন্মাদনা মোটেই কম নয়, তা বোঝা যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বাজারগুলিতে। কেমন সেটা? শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের কুমোরপাড়া এলাকায় মাটির প্রদীপের বরাত দিতে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি একসঙ্গে পাঁচ হাজার মাটির প্রদীপ চেয়েছিলেন। কিন্তু কুমোরদের ‘ভাঁড়ার’ প্রায় শূন্য। তাই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। হন্যে হয়ে এ দোকান-ও দোকান করছেন তিনি।
মেদিনীপুর শহরের বেনে দোকানগুলিতে এখন মাটির প্রদীপের চাহিদা তুঙ্গে। আর চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় মাটির প্রদীপের দামও চড়েছে বিশাল। প্রদীপ পাল নামে কুমোরপাড়ার এক শিল্পীর কথায়, ‘‘চলতি সপ্তাহে মাটির প্রদীপের বরাত নিয়ে অনেকে এসেছেন। এমন চাহিদার কথা যদি আগে জানা যেত তা হলে আরও মাটির প্রদীপ বানানোর কাজ শুরু করে দিতাম।’’ এ দিকে হাতে সময় কম। তার উপর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা রয়েছে। তাই মানুষ যে সংখ্যায় প্রদীপ চাইছেন, তা জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানাচ্ছেন ওই কুমোরশিল্পী। বিজয় দাস নামে আর এক কুমোর বলেন, ‘‘বৃষ্টির কারণে প্রদীপ বানিয়েও শুকনো করা যাচ্ছে না। যেগুলো ছিল সবই প্যাকিং করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ বস্তুত, রঙিন টুনি বাল্বের দাপটে দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের বিক্রিবাটা যে ভাবে কমেছে, তা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে অযোধ্যার রামমন্দিরের সৌজন্যে। উপরন্তু বাজারে রাম-সীতা এবং হনুমানের ধ্বজার বিক্রিও চলছে হুড়মুড়িয়ে।