জেসিবি মেশিন ঘিরে বিক্ষোভ চাষিদের। নিজস্ব চিত্র।
ভেড়ি তৈরিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল কোলাঘাটের দেড়িয়াচক এলাকার বিবিচকে। জেসিবির চালক ও খালাসিকে আটক করে ভেড়ি তৈরি বন্ধ করলেন এলাকার অনিচ্ছুক কৃষকেরা। ঘটনাস্থলে যায় কোলাঘাট থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিবিচক মৌজায় এক বছর আগে ভেড়ি তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন গোপাল বর্মন নামে এক ভেড়ি মালিক। গত বছর এলাকার অনিচ্ছুক কৃষকরা জফুলি-বিবিচক কৃষি জমি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করে ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। গত বছর জানুয়ারি মাসে ভেড়ি তৈরি করতে এসে এলাকার কৃষকদের তাড়া খেয়ে গোপাল ও তার লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সম্প্রতি বিবিচক মৌজায় গোপাল ফের ভেড়ি তৈরির তোড়জোড় শুরু করে বলে অভিযোগ। শনিবার রাত থেকে তার জন্য জেসিবি মেশিন নামিয়ে গোপাল মাটি কাটার কাজ শুরু করে।
মাটি কাটার খবর পেয়ে রবিবার সকালে জফুলি-বিবিচক কৃষি জমি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির শতাধিক সদস্য জোট বেঁধে প্রতিবাদে নামেন। মহিলারা হাতে ঝাঁটা ও লাঠি নিয়ে ঘিরে ফেলেন জেসিবি মেশিন। অনিচ্ছুক কৃষকেরা চালক ও খালাসি সহ জেসিবি মেশিন বিবিচক গ্রামে নিয়ে আসেন। জেসিবির চালক ও খালাসিকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর দেওয়া হয় কোলাঘাট থানায়। কোলাঘাট থানার ওসি রাজকুমার দেবনাথ বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। জেসিবি মেশিন-সহ তার চালক ও খালাসিকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেলে শান্ত হন বিক্ষোভকারীরা।
জফুলি-বিবিচক কৃষি জমি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সম্পাদক লক্ষ্মীকান্ত প্রামাণিক বলেন, ‘‘স্থানীয় কৃষকদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের ফলে বিবিচকে ভেড়ি তৈরি বন্ধ করা গিয়েছে। আমরা কোনওভাবেই চাষের জমিতে ভেড়ি করতে দেব না। আগামী দিনেও ভেড়ির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পদক্ষেপ করেছে।’’ কোলাঘাট থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চাষিরা না চাইলে জমিতে ভেড়ি করতে দেওয়া হবে না। আজকের ঘটনায় দু'জনকে আটক করা হয়েছে। ভেড়ি তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি জেসিবি মেশিন আমরা বাজেয়াপ্ত করেছি।’’
কোলাঘাট ব্লক জুড়ে বেআইনি মাছের ভেড়ি তৈরি বন্ধ করতে এদিন জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেয় কোলাঘাট ব্লক মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি।