এখানেই রামসেতু তৈরির দাবি উঠেছে। নিজস্ব চিত্র
গোয়ালতোড়ের হুমগড়ে শিলাবতী নদীর উপর রামসেতু নির্মাণের দাবি জানাল এলাকার নাগরিক সংগঠন।
কয়েকদিন আগেই হুমগড়ের পাথরবেড়িয়ায় একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। তাঁর কাছেই এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে গড়া হুমগড় নাগরিক উন্নয়ন সমিতি কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম হুমগড়ের পাথরবেড়িয়ায় শিলাবতী নদীর উপর রামসেতু বা রঘুনাথম সেতু নির্মাণ। নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংসদকে নদী সংলগ্ন এলাকা ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এ ছাড়া নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এলাকায় একটি হাসপাতাল নির্মাণ, হুমগড়কে কেন্দ্র করে আলাদা ব্লক ও থানা, শিলাবতী নদী পাড় বাঁধানো, স্থানীয় রাজার বাঁধ সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন প্রভৃতি দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয় সাংসদের হাতে।
বাম আমলে হুমগড়ের পাথরবেড়িয়ায় শিলাবতী নদীর উপর কাঠের অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করা হয়। সেই সাঁকোই পারাপারের একমাত্র ভরসা ছিল এলাকার বাসিন্দাদের। জোগারডাঙা অঞ্চলের মানুষের ব্লক শহর গোয়ালতোড় ও পাশের ব্লক গড়বেতার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই কাঠের সাঁকো। পাশের বাঁকুড়া জেলার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করে এই সাঁকো। মাঝেমধ্যে সংস্কার করা হলেও নদীতে জল বাড়লে সেই সাঁকোর উপর দিয়ে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ২৫-৩০ টি গ্রামের বাসিন্দারা। এ বারের বর্ষায় সাঁকোর কাঠের পাটাতনে ফাটল দেখা দেওয়ায় বাস-সহ বড় গাড়ি যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে গড়বেতা ২ পঞ্চায়েত সমিতি। এখন বিপজ্জনকভাবে ছোট গাড়ি, বাইক, সাইকেল নিয়ে পেরোতে হয় সেই সাঁকো। নদীপাড়েই রয়েছে বহু পুরনো রামমন্দির। প্রত্যহ সেখানে বহু দূরদূরান্ত থেকে ভক্তেরা আসেন পুজো দিতে। ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সাঁকো পেরিয়েই আসতে হয় মন্দিরে।
পাথরবেড়িয়ার এই স্থানে স্থায়ী কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করতে এলাকার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী চেষ্টা করছেন। তিনি এলাকার সাংসদ কুনার হেমব্রমকে কয়েকমাস আগে গড়বেতার একটি অনুষ্ঠানে পাথরবেড়িয়ার এই স্থানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছিলেন। এবার সাংসদের কাছে এলাকার নাগরিক সংগঠন একই দাবি জানাল।
হুমগড় নাগরিক উন্নয়ন সমিতির সভাপতি অনিলবরণ দাস ও সম্পাদক শিবশঙ্কর গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা সাংসদের কাছে সাতদফা দাবি রেখেছি। এরমধ্যে অন্যতম পাথরবেড়িয়ায় শিলাবতী নদীর উপর রামসেতু বা রঘুনাথম সেতু নির্মাণ করা, যেহেতু কাছেই ঐতিহ্যবাহী রামমন্দির, তাই রামের নামেই স্থায়ী সেতু করার দাবি জানিয়েছি। সাংসদকে স্থানটি ঘুরিয়ে দেখিয়েওছি।’’ সাংসদ কুনার হেমব্রম বলেন, ‘‘নাগরিক সংগঠনের দাবিপত্র পেয়েছি, খতিয়ে দেখছি। এ নিয়ে যেখানে যা বলার আমি বলব।’’