সমুদ্র স্নানে বাবা-মা ব্যস্ত, পাড় থেকে ছেলে উধাও  

শনিবার দুপুরে দিঘার জগন্নাথ ঘাটে স্নান করতে নামেন ওই পর্যটকদলের বেশ কয়েক জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা  

দিঘা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৮
Share:

আবির ধাড়া।

সৈকতে ছেলেকে বসিয়ে রেখে স্নানের মজা নিতে সমুদ্রে নেমে পড়েছিলেন। বাবা-মা। অনেকক্ষণ পরে স্নান সেরে পাড়ে এসে ছেলের খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন সে বেপাত্তা। শনিবার রাতে বাবা-মা দিঘা থানায় নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করলেও রবিবার রাত পর্যন্ত ছেলের খোঁজ মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির জাঙ্গিপাড়া থেকে ৫৫ জনের একটি পর্যটক দল শুক্রবার বাসে করে দিঘায় বেড়াতে এসেছিল। ওই দলেই ছিলেন নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বছর সাতেকের আবির ধাড়ার বাবা-মা। শনিবার দুপুরে দিঘার জগন্নাথ ঘাটে স্নান করতে নামেন ওই পর্যটকদলের বেশ কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আবিরের বাবা-মাও। আবিরের মামা প্রেমচাঁদ মান্না জানান, শুধু আবির নয়, দলের আরও ৪-৫ জন বাচ্চাকে সৈকতে বসিয়ে রেখেই স্নান করতে নেমেছিলেন তাঁরা। কিছুক্ষণ বাদে ফিরে তাঁরা ফিরে এসে অন্যদের দেখতে পেলেও আবির সেখানে ছিল না। আবিরের বাবা রঞ্জিতের কথায়, ‘‘সমুদ্রে তখন ভাটা চলছিল। আমাদের সঙ্গে আসা কয়েকজন বাচ্চার সঙ্গে আবিরকেও পাড়ে বসিয়ে রেখে যাই। কখন যে সে উধাও হয়ে গিয়েছে, বাকিরাও টের পায়নি। আমার ছেলেটা একটু খেতে ভালবাসে। তাই খাবারের লোভে হয়তো কারও সঙ্গে চলে গিয়েছে ভেবে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। না পেয়ে শনিবার রাতে দিঘা থানায় অভিযোগ করি।’’

প্রসঙ্গত মাস খানেক আগে এমনি একটি ঘটনা ঘটেছিল দিঘায়। তবে সে বার অল্পের রক্ষা পায় শিশুটি। ওই ঘটনায় ছেলেকে গাড়িতে রেখে সে যাতে বেরিয়ে যেতে না পারে সে জন্য চারপাশের কাচ তুলে দিয়ে স্নান করতে চলে গিয়েছিলেন বাব-মা। গাড়িতে দমবন্ধ হয়ে শিশুটিকে বাঁচার জন্য ছটফট করতে দেখে স্থানীয় লোকজন গাড়ির কাচ ভেঙে তাকে উদ্ধার করে। অর্ণব মিশ্র নামে এক পর্যটকের দাবি, দিঘায় বেড়াতে এসে অভিভাবকদের নিজেদের ছেলেমেয়েকে নিয়ে আরও সজাগ থাকা দরকার। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যখন বাবা-মায়ের কাছে নিরাপদ নয়, তখন তাদের নিরাপত্তা দেবে কে!’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে সমুদ্রে তল্লাশি চালানো হলেও রবিবার রাত পর্যন্ত ওই শিশুর খোঁজ মেলেনি। তাই তাঁদের অনুমান হয়তো শিশুটি সমুদ্রে নামেনি। পুলিশের দাবি, সৈকতে পর্যটকদের সতর্ক করতে মাইকিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেখানে সব সময় ছেলেমেয়েদের কাছছাড়া না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তার পরেও এমন ঘটনায় পর্যটকদের একাংশের গাফিলিতিই দায়ী। কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পর্যটকদের সচেতন করতে আমরা সব সময়ই প্রচার করছি। পাশাপাশি বাব-মায়েদেরও আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে পুলিশ তাঁদের সবরকম সাহায্যের জন্য তৈরি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement