শিশু ‘খুন’, দেহ রেখে ক্ষোভ

বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসীরা। মৃত কিশোরের মৃতদেহ সঠিকভাবে ময়নাতদন্ত করা এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়েরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০০:১০
Share:

বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র

পারিবারিক ঝামেলার জেরে কেকের সঙ্গে কীটনাশক খাইয়ে ছ’বছরের এক শিশুকে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী পরিবারের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা ঘিরে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের দেবীপুরে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে শিশুর মৃতদেহ আটকে রেখে লাগাতার বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ২৫ জুলাই বিকালে খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত অসুস্থতার কারণে বিশ্বজিৎ মণ্ডল (৬) নামে ওই শিশুকে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এর পরেই শিশুর পরিবার প্রতিবেশী এক পরিবারের বিরুদ্ধে শিশুটিকে বিষাক্ত খাবার খাইয়ে খুনের অভিযোগ করে।

বিশ্বজিতের মা সাবিত্রী মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিবেশী এক পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল। ওই পরিবারের লোকেরা কেকের সঙ্গে কীটনাশক খাইয়ে আমার ছেলেকে খুন করেছে।’’ সাবিত্রীর আরও অভিযোগ, শুক্রবার তার ছেলের দেহ ময়নাতদন্তের সময় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পুলিশ এবং শাসকদল চেষ্টা করে। তাঁর দাবি, ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গেলে, শাসকদলের স্থানীয় লোকেরা বিষয়টিকে ‘চেপে’ যাওয়ার জন্য জানিয়েছিল। পুলিশও তাঁর কাছ থেকে বিশ্বজিৎ নিজের ইচ্ছায় কীটনাশক খেয়েছে বলে লিখে সই করিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ওই মহিলার।

Advertisement

বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসীরা। মৃত কিশোরের মৃতদেহ সঠিকভাবে ময়নাতদন্ত করা এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়েরা। শেষ পর্যন্ত শনিবার বিকালে ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ আশ্বাস দেওয়ার পর মৃতদেহ সৎকার করা হয়। ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে মৃতের প্রতিবেশী তথা অভিযুক্ত কিশোরীর বাবা লক্ষ্মণ দুয়ারি বলেন, ‘‘তিন জন খেলছিল। খেলার ছলে ঘটনাটি হয়েছে। আমার মেয়েও তমলুকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর সঙ্গে পারিবারিক আক্রোশের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

ময়নাতদন্ত ‘চেপে’ যাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে এলাকার তৃণমূল নেতা বনবিহারি মণ্ডল বলেন, ‘‘দেহ মর্গ থেকে আনার সময় কাগজপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও চাপ দেওয়া হয়নি।’’ হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর করাণ স্পষ্ট হবে। তবে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ যে উঠেছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement