ফাইল চিত্র
এগারো বছরের পুরনো সিপিএম কর্মী খুনের মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ (আনলফুল অ্যাকটিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট) ধারা যুক্ত করার আবেদন করেছে এনআইএ। শুক্রবার সেই আবেদনের পরেই শনিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে গরহাজির থাকলেন জঙ্গলমহলে জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন ও বর্তমানে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। ‘অসুস্থ’ থাকার কারণেই এ দিন তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির কোবরা বাহিনীর ক্যাম্পে যেতে পারেননি বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে ছত্রধর শালবনির কোবরা ক্যাম্পে এনআইএ-র জেরার মুখোমুখি হয়েছেন। তবে এ দিন দুপুরে তাঁর আইনজীবী কৌশিক সিংহ কোবরা ক্যাম্পে গিয়ে মামলার তদন্তকারী অফিসার তথা এনআইএ-র কলকাতা শাখার ডিএসপি কাঞ্চন মিত্রের সঙ্গে দেখা করে জানান, ছত্রধর অসুস্থ। তাই আসতে পারেননি। কৌশিক লিখিতভাবে তদন্তকারী অফিসারকে জানিয়েছেন, শুক্রবার কলকাতার বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন ছত্রধর। কিন্তু হঠাৎই আদালত চত্বরে ছত্রধরের প্রবল শ্বাসকষ্ট ও জ্বরের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে রয়েছেন ছত্রধর। জেরার জন্য পরবর্তী কোনও দিন ধার্য করতে অনুরোধ করেছেন কৌশিক। এ দিন ছত্রধরের মোবাইল ফোনে কল করা হলে জড়ানো গলায় তিনি বলেন, ‘‘খুবই অসুস্থ। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে।’’
পরে কৌশিক বলেন, ‘‘ছত্রধর শয্যাশায়ী। এই মুহূর্তে তাঁর পক্ষে এনআইএ-র সামনে হাজির হওয়া সম্ভব নয়। এ দিন কোবরা শিবির চত্বরে গিয়ে এনআইএ-র তদন্তকারী আফিসারকে সেই কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়ে এসেছি।’’ কিন্তু জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ থাকলেও ছত্রধরকে কেন হাসপাতলে ভর্তি করানো হয়নি? কৌশিকের জবাব, চিকিৎসের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি শয্যা-বিশ্রামে রয়েছেন। চিকিৎসক যেমন বুঝবেন তেমন পদক্ষেপ করবেন। ছত্রধর এখন কোথায় বিশ্রামে রয়েছেন সে ব্যাপারে অবশ্য খোলসা করে কিছু বলতে চাননি তাঁর আইনজীবী। সূত্রের খবর, কলকাতায় কোথাও রয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। ফোনে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখছেন। ছত্রধরের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী নিয়তিও রয়েছেন।
এগারো বছর আগে লালগড় থানার শালবনি গ্রামে খুন হয়েছিলেন সিপিএম কর্মী প্রবীর মাহাতো। সেই পুরনো মামলা খুঁড়ে নতুন ভাবে মামলা দায়ের করেছে এনআইএ। ওই মামলার ছত্রধর-সহ মোট ৩০ জনকে শুক্রবার এনআইএ-র বিশেষ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তলব করা হয়েছিল। বাকি অভিযুক্তরা হাজিরা দিলেও ‘অসুস্থ’ ছত্রধর আদালত চত্বর থেকে চলে যান। তিনি আর হাজিরা দেননি। শুক্রবার ছত্রধর সহ ৫ জন অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেন এনআইএ-র তদন্তকারী অফিসার। কাল, সোমবার ওই আবেদনের শুনানি হবে।