মা বেদনবালার সঙ্গে ছত্রধর মাহাতো। পাশে নাতি কোলে ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি। বৃহস্পতিবার আমলিয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
হাই কোর্টের অনুমতি মিলেছিল আগেই। সেই মতো বৃহস্পতিবার অসুস্থ মাকে দেখতে লালগড়ের আমলিয়ার বাড়িতে এলেন জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা তথা রাজ্য তৃণমূলের প্রাক্তন সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। আদালতের নির্দেশে মোট ৯৬ ঘণ্টা গ্রামের
বাড়িতে থাকতে পারবেন তিনি। রবিবার বিজয়া দশমীতে তাঁকে ঝাড়গ্রাম ছাড়তে হবে।
এ দিন দুপুর সওয়া একটা নাগাদ পৌঁছন ছত্রধর। সাড়ে তিন বছর পরে ছেলেকে দেখে জড়িয়ে ধরেন মা বেদনবালা মাহাতো। কলকাতা থেকে আসার পথে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশের গাড়ি ছত্রধরকে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসে। ছত্রধর বলেন, ‘‘অনেক বছর পরে শারদোৎসবের সময়ে মায়ের কাছে এলাম। মাকে দেখে সব যন্ত্রণা কষ্ট ভুলে গিয়েছি।’’ আড়াই মাস আগে ছত্রধরের ছোট ছেলে দেবীপ্রসাদের স্ত্রী পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এই প্রথম নাতি দীপাংশুর মুখ দেখলেন ছত্রধর। ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি বলছেন, ‘‘সপ্তমীতে মাছ হয়েছে। অষ্টমীতে নিরামিষ। তার পরদিন মাংস হবে।’’
বাম আমলে ২০০৯ সালের প্রথম গ্রেফতার হন ছত্রধর। যাবজ্জীবনের সাজা ১০ বছর করার পরে ২০২০ সালে তিনি জেলমুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। তখনই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের পদ দেওয়া হয় ছত্রধরকে। রাজধানী এক্সপ্রেস আটক মামলায় ২০২১ সালে ছত্রধরকে গ্রেফতার করে এনআইএ। গত বছর সে মামলায় জামিন পান ছত্রধর। জামিনের শর্ত অনুযায়ী, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় তিনি ঢুকতে পারবেন না।
ইতিমধ্যে ছত্রধরের অশীতিপর মা অসুস্থ পড়লে বাড়িতে আসার জন্য ছত্রধরের আর্জি মঞ্জুর করে হাই কোর্ট। তবে পুলিশ পাহারা থাকবে। পরিজন ছাড়া এলাকাবাসীর সঙ্গে মেলামেশাতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিনহা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনেই আমার মক্কেল বাড়িতে থাকবেন।’’ আর জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহার বক্তব্য, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রবিবার পর্যন্ত পুলিশি বন্দোবস্ত ও এসকর্ট বহাল থাকবে।’’