ছত্রধরের দুই ছেলের বিয়ে
বাড়িতে জোড়া বিয়ের আসর। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ছ’দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেলেন ছত্রধর মাহাতো। ২ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ছত্রধরের প্যারোল মঞ্জুর করেছে কলকাতায় এনআইএ-র বিশেষ আদালত। প্যারোলে মুক্তির পরেই শনিবার ঝাড়গ্রামের লালগড় থানার আমলিয়া গ্রামে এলেন তৃণমূল নেতা ছত্রধর। ৮ জুলাই আবার তাঁকে কলকাতার আদালতে হাজিরা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিন্হা।
ছত্রধরের দুই ছেলে দেবীপ্রসাদ মাহাতো ও ধৃতিপ্রসাদ মাহাতোর বিয়ে আগামী ৩ ও ৫ জুলাই। বাড়িতে প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান ৬ জুলাই। দুই ছেলের বিয়েতে গৃহকর্তা যোগ দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শুরুতে সংশয়ে ছিল তাঁর পরিবার। বাড়িতে এত আনন্দ আয়োজন ছত্রধর ছাড়া বৃথা, এ কথা আদালতে জানিয়ে স্বামীর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন স্ত্রী নিয়তি মাহাতো। ওই আবেদনের ভিত্তিতেই ছত্রধরের প্যারোল মঞ্জুর করেছে আদালত। স্বামীর প্যারোলের পর নিয়তি বলেন, ‘‘বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছে। রবিবার এক ছেলে, মঙ্গলবার আর এক ছেলের বিয়ে। বুধবার প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। বাড়ির কর্তা জেলে থাকলেও নিজেকেই সব কাজ করতে হচ্ছে। ছেলেদের বিয়েতে স্বামী বাড়িতে এসেছেন, এটাই অনেক।’’
২০০৮-২০০৯ পর্বে জঙ্গলমহল তখন মাওবাদী সন্ত্রাসে উত্তাল। সেই সময়ে পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির আন্দোলনের মুখ ছিলেন ছত্রধর। ২০০৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর লালগড়ের বীরকাঁড় গ্রাম থেকে প্রথম বার গ্রেফতার হন তিনি। দশ বছরেরও বেশি জেলবন্দি থাকার পরে হাইকোর্ট সাজার মেয়াদ কমানোয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেলমুক্ত হয়ে ছত্রধর তৃণমূলে যোগ দেন। শাসকদলের রাজ্য সম্পাদকের পদ দেওয়া হয় তাঁকে। তবে গত বছর ২৭ মার্চ জঙ্গলমহলে বিধানসভা ভোট মিটতেই গভীর রাতে লালগড়ের আমলিয়া গ্রামে হানা দিয়ে ছত্রধরকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ২০০৯ সালের দু’টি পুরনো মামলায় ইউএপিএ আইনের ধারা যুক্ত করে ছত্রধরকে অভিযুক্ত করা হয়। তার পর থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছত্রধর।