ঝাড়গ্রাম আদালতে আইনজীবীর সঙ্গে ছত্রধর। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
দাঁতের যন্ত্রণায় রীতিমতো কাবু তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। মঙ্গলবার তাঁকে ফের জেরা করার জন্য কলকাতার কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়েছিল এনআইএ। ছত্রধর যাননি। তবে এ দিনই পুরনো একটি মামলার রায় ঘোষণার দিন থাকায় ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজিরা দেন তিনি।
দুপুরে আদালত চত্বরে বাঁ গালে রুমাল চেপে ছত্রধর বলেন, ‘‘সোমবার রাত থেকে দাঁতে অসহ্য যন্ত্রণা। দন্ত চিকিৎসককে দেখিয়েছি। আদালতে হাজিরার দিন থাকায় আসতে বাধ্য হয়েছি। কলকাতায় দীর্ঘপথ গাড়িতে যাওয়ার ধকল নিতে পারা সম্ভব নয় বলে যাইনি।’’
তাহলে কি বুধবার লালগড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী জনসভায় তিনি হাজির থাকবেন? ছত্রধরের জবাব, ‘‘ওষুধ খাচ্ছি। যদি ব্যথা একটু কমে তাহলে অবশ্যই দিদির সভায় থাকব।’’
২০০৯ সালে লালগড়ের এক সিপিএম কর্মী খুনের মামলায় নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। ওই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছত্রধরকে এর আগে তিনবার শালবনির কোবরা শিবিরে ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা ধরে জেরা করেছিলেন এনআইএ-র তদন্তকারী অফিসারেরা। ছত্রধরের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার দিন প্রথমে ১৫ মার্চ ঠিক হতেই ওই দিনেই তাঁকে ফের জেরা করার জন্য কলকাতায় তলব করে এনআইএ। যদিও মমতার সভার দিন পিছিয়ে গিয়েছে। আজ, বুধবার গোপীবল্লভপুরের বাহারুণা ও লালগড়ে দু’টি সভা হবে। এনআইএ-র তলবে সোমবারই ছত্রধর কলকাতায় সংস্থার কার্যালয়ে হাজিরা দেন। টানা ছ’ঘন্টা তাঁকে জেরা করা হয়। মঙ্গলবারও তাঁকে জেরা করা হবে বলে তলবি চিঠি ধরানো হয়। ছত্রধর অবশ্য সোমবার জেরা শেষে রাতে লালগড়ের বাড়িতে ফিরে আসেন। ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিংহের দাবি, ‘‘ছত্রধর বর্তমানে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠায় তাঁকে হয়রান করার উদ্দেশ্যেই বার বার তলব করছে এনআইএ। দাঁতে যন্ত্রণার কারণে এ দিন দীর্ঘপথ উজিয়ে কলকাতা যাওয়ার ঝুঁকি নেননি তিনি।’’ সেই সঙ্গে কৌশিক জানাচ্ছেন, এ দিন ২০০৯ সালের পুরনো একটি ১৪৪ ধারা ভঙ্গের মামলায় রায় ঘোষণার দিন ছিল। ছত্রধর ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত হওয়ায় আদালতে তাঁর হাজির থাকাটা আবশ্যিক ছিল। এ দিন ওই মামলায় বেকসুর খালাস পান ছত্রধর।
এনআইএ সূত্রের দাবি, পুরনো মামলা হলেও ছত্রধরকে জেরা করে নতুন-নতুন তথ্য মিলছে। তাই তাঁকে বার বার তলব করা হচ্ছে। ছত্রধরের ঘনিষ্ঠ মহল মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাতে ছত্রধর যোগ দিতে না পারেন সেই কারণেই তাঁকে বার বার তলব করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মঙ্গলবারে হাজিরা দিলে তাঁকে হয়তো বুধবারও ফের ডাকা হত। তাহলে কি সেই আশঙ্কাতেই এ দিন হাজিরা এড়ালেন? ছত্রধরের জবাব, ‘‘আমি তদন্তে সব সময়ই সহযোগিতা করছি। জেলে থাকাকালীন দাঁতের সমস্যা হয়েছিল। ফের ব্যথা শুরু হওয়ায় এ দিন আর কলকাতায় যেতে পারিনি।’’