Cut Money

মহিলা উপভোক্তার থেকে কাটমানি, অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি

বিলাসীর স্বামী বাদল পাল জানান, ১০ ফেব্রুয়ারি টাকা তুলে নয়াপুকুরের তৃণমূল বুথ সভাপতি দীপক দে-র অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে লক্ষ্মীকান্তের কথা মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৫
Share:

সরকারি প্রকল্পে পোলট্রি গড়তে টাকা পেয়েছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক মহিলা। তাঁর থেকে জোর করে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর পঞ্চায়েতের নয়াপুকুরের বাসিন্দা বিলাসী সিংহের অভিযোগ, ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন মকরামপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শীট।

Advertisement

গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় বেল্টিতে একটি কর্মসূচি করে কালিয়াঘাই নিউ জেনারেশন ওটারশেড ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট। সহযোগিতায় ছিল জেলা কৃষি দফতর। তারই সয়েল কনজ়ারভেশন ডেমনস্ট্রেশন বিভাগের তরফে এলাকার স্বনির্ভর দলের মহিলাদের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়। অনেককে গবাদি পশু দেওয়া হয়, অনেকে পান পোল্টি ফার্ম তৈরির সাহায্য। বিলাসি জানাচ্ছেন, পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য ২৮ হাজার টাকা পান। ৬ ফেব্রুয়ারিই টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত তাঁকে টাকা দিতে ‘চাপ’ দেন বলে অভিযোগ। বিলাসী বলেন, ‘‘ডেকে পাঠিয়ে অর্ধেক টাকা দিতে হবে বলেন লক্ষ্মীকান্ত শীট। দু’দিনের মধ্যে দিতে বলেন। দিতে রাজি না হওয়ায় হুমকি দেওয়া হয়।’’

বিলাসীর স্বামী বাদল পাল জানান, ১০ ফেব্রুয়ারি টাকা তুলে নয়াপুকুরের তৃণমূল বুথ সভাপতি দীপক দে-র অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে লক্ষ্মীকান্তের কথা মতো। বাদলের কথায়, "আমি নিজেও অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে দল করি। তাও ছাড় পেলাম না।’’ লক্ষ্মীকান্তের অবশ্য দাবি, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানি না। কারও কাছে টাকা চাইনি।’’ যদিও স্থানীয় বাসিন্দা তথা নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুত কর্মাধ্যক্ষ সুকমলা বেরা বলছেন, ‘‘বিলাসীর কাছ থেকে অঞ্চল সভাপতি টাকা নিয়েছেন।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের বক্তব্য, এই প্রকল্পের অন্য উপভোক্তাদের থেকেও কাটমানি তুলছেন নেতারা। এই প্রকল্পের আওতায় পুকুর খননের কাজেও নানাভাবে টাকা তোলা হচ্ছে।

Advertisement

বিলাসীর ঘটনায় নারায়ণগড়ের বিডিও, জেলাশাসক, খড়্গপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।বিলাসীর সঙ্গে সুকমলাও বিভিন্ন জায়গায় অঞ্চল সভাপতির নামে লিখিত অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সেক কওসর আলি বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ এসেছে কিনা দেখা হয়নি। অফিসে এসে জানালে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ খোঁজ নিয়ে দেখার কথা বলেছেন খড়্গপুরের এসডিপিও দীপক সরকারও। আর নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূলে সভাপতি সুকুমার জানা বলেন, ‘‘অভিযোগের সত্যতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এতদিন পরে কেন অভিযোগ জানালেন? বিলাসী ও তাঁর স্বামীর দাবি, ভয়ে প্রথমে জানাতে পারিনি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘কাটমানি পেতে দলের লোককেও ছাড়ছেন না তৃণমূলের নেতারা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement