কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কাছে জবকার্ডধারীরা। নিজস্ব চিত্র
‘আপনার কতদিনের মজুরি বাকি রয়েছে! শেষ কবে কাজ করেছেন’? কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজের তদারকি করতে গিয়ে জব কার্ড হোল্ডারদের এভাবেই প্রশ্ন করলেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। জব কার্ড হোল্ডারদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হল তাঁদের।
রবিবার কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের দারিয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা কাজ করেও বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন জব কার্ড হোল্ডার। প্রসঙ্গত, শনিবার দেশপ্রাণ ব্লকেরই আমতলিয়া গ্রামে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সে সময় স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছিলেন, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে যে সব কাজ দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর কয়েকদিন আগে শেষ হয়েছে সেগুলিই ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। এরপর ওই ব্লকের প্রতাপপুর এবং কানাইচট্টা গ্রামে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ২০২১ সালে ইয়াসে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ওই এলাকা। রাস্তাটুকুও ছিল না। তারপর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মাটির বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এ দিন সেই কাজ ঘুরে দেখেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ব্লক প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশংসা করেন তাঁরা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিডিও শুভজিৎ জানাকে ১০০ দিনের কাজে প্রকল্পে এ ধরনের কাজ আরও বেশি করার জন্য পরামর্শ দেন। সে সময় বকেয়া মজুরি দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সামনে বিক্ষোভ দেখান জব কার্ড হোল্ডাররা। এক শ্রমিকের দাবি, ‘‘২৮ দিন কাজ করেছি। জব কার্ডে লেখাও রয়েছে। অথচ দেড় বছর ধরে মজুরির টাকা পাইনি।’’ সেখানে হাজির থাকা কয়েক জন জব কার্ড হোল্ডারের জব কার্ড যাচাই করে দেখেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। পরে দ্রুত বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দেন তাঁরা। বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, ‘‘জব কার্ড হোল্ডার কয়েক জন মজুরি টাকা পাননি বলে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। কোনও বিক্ষোভ হয়নি। গোটা ব্লকে সমস্ত প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এ ধরনের কাজ বেশি করে করার পরামর্শ দিয়েছেন।’’
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা সব কিছু দেখে যাচ্ছি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবগত করব।’’ বিকেলে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা যান আউরাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাগজপত্র খতিয়ে দেখেন। পরে এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সরেজমিন ঘুরে দেখেন। সে সময় এক বার্ধক্য ভাতা প্রাপকের বাড়িতে যান। তাঁকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রশ্ন করেন, ‘‘ভাতা বাবদ পাওয়া টাকা দিয়ে কী করেন?’’ উত্তরে ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘‘প্রত্যেক মাসে কিছু ওষুধ পত্র কিনতে হয়।’’ যদিও ভাতা বাবদ পাওয়া টাকা পর্যাপ্ত নয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কাছে জানান তিনি।