প্রতীকী ছবি।
এখনও বিধানসভা ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়নি। তবে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শীঘ্রই জঙ্গলমহলে পৌঁছতে পারে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই বাহিনী আসবে রুট মার্চের জন্য। ভোটারদের অভয় দিতে।
রাজ্যে ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা। এক-দু’দিনের মধ্যেই আসা শুরু হতে পারে। এর মধ্যে ২৬ কোম্পানি বাহিনীই পৌঁছবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম— জঙ্গলমহলের এই চারটি জেলায়। অর্থাৎ, রাজ্যে আসা বাহিনীর ২০ শতাংশই জঙ্গলমহলে থাকবে। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে শুধুমাত্র দু’টি জেলায় সর্বোচ্চ ৯ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছবে। ওই দু’টি জেলাই জঙ্গলমহলের, পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রাম। রাজ্যের বাকি জেলাগুলির মধ্যে কোনও জেলায় ২-৩ কোম্পানি বাহিনী পৌঁছনোর কথা, কোনও জেলায় ৫-৬ কোম্পানি বাহিনী পৌঁছনোর কথা। ভোটের সময়ে ঠিক কত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যাবে তা ক্রমে স্পষ্ট হবে। রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘রুট মার্চের জন্য রাজ্যে শীঘ্রই কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছনোর কথা।’’
যে ১২৫ কোম্পানি বাহিনী আসছে, তার মধ্যে সিআরপি, এসএসবি, বিএসএফ, আইটিবিপি, সিআইএসএফ থাকবে। এক কোম্পানি বাহিনীতে ১২টি সেকশন থাকে। এক-একটি সেকশনে ৮ জন করে জওয়ান থাকেন। সাধারণত, রুট মার্চের জন্য কোম্পানি পিছু ৯টি সেকশনকে (৭২ জন জওয়ান) কাজে লাগানো হয়। বিজেপি-সহ বিরোধীদের দাবি ছিল, ভোটের আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে আসুক। রুট মার্চ শুরু হোক। সেটা যে হচ্ছে তা স্পষ্ট।
এ নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘রুট মার্চের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা দরকার ছিল। আমাদের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে স্পর্শকাতর এলাকায় রুট মার্চ করানো হোক। বাহিনীকে যেন বসিয়ে রাখা না হয়।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির বক্তব্য, ‘‘বিজেপি যদি ভাবে আগেভাগে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে চমক দেবে, তাহলে ভুল ভাবছে। ভোট তো দেবে মানুষ।’’
গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে ভাল ফল করেছে বিজেপি। এ বার বিধানসভা নির্বাচনে এই এলাকার সব আসনকে ‘পাখির চোখ’ করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতেও শোনা যাচ্ছে, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬ তে ১৬, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫ তে ১৫, ঝাড়গ্রামে ৪ এ ৪, পুরুলিয়ায় ৯ এ ৯, বাঁকুড়ায় ১২ এ ১২। এই ৫৬টা সিট থেকে (তৃণমূলকে) একেবারে পরিষ্কার করব।’’ এই আবহে জঙ্গলমহলের চারটি জেলায় বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছতে চলার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের রুট মার্চ শুরু হয়েছে। এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ শুরু হবে।