গোয়ালতোড় সাঁওতাল বিদ্রোহ সার্ধশতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়।
বহিরাগতদের আনাগোনা ঠেকাতে কলেজে কলেজে বসেছে সিসি ক্যামেরা। শুধু কলেজ চত্বরে নয়, নজরদারি বাড়াতে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় সাঁওতাল বিদ্রোহ সার্ধশতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুমেও বসানো হল ক্যামেরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদও।
কলেজ চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় আগে থেকেই ১৬টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অধ্যক্ষের ঘরে এলইডি মনিটরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সবসময় নজরদারি চালানো হয়। এ বার নজরদারির পরিধি বাড়াতে ইউনিয়ন রুমেও সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ দেবনারায়ণ রায়ের বক্তব্য, “ছাত্র সংসদ নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিদের জন্য। ইউনিয়ন রুমে কোনও বহিরাগত ঢুকছেন কি না সেটা লক্ষ্য রাখার জন্যই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের মতামত নিয়েই ক্যামেরা বসানো হয়েছে।” টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত-ও বলছেন, ‘‘এতে যদি শিক্ষার পরিবেশ ভাল হয়, কলেজে শৃঙ্খলা বজায় থাকে, তাহলে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’
ইউনিয়ন রুমে ক্যামেরা বসাতে প্রথম উদ্যোগী হন অধ্যক্ষ দেবনারায়ণবাবুই। ২০১৫সালের নভেম্বরে কোচবিহারের এবিএন শীল সরকারি কলেজ থেকে লিয়েনে তিনি গোয়ালতোড়ের সাঁওতাল বিদ্রোহ সার্ধশতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন। কলেজের একাংশ ছাত্রের অভিযোগ, বর্তমান অধ্যক্ষের দায়িত্বে আসার আগে কলেজে প্রায়ই বহিরাগতরা ঢুকতেন। ইউনিয়ন রুমেও চলত আড্ডা-গল্প। কলেজের দায়িত্ব নিয়ে এ সব নজর এড়ায়নি দেবনারায়ণবাবুর। বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে তিনি কলেজ চত্বরে ক্যামেরা বসাতে উদ্যোগী হন।
বহিরাগত ঠেকাতে শুধু নজর ক্যামেরাই নয়, কলেজে ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট পোশাক পরে ও ‘আইডেন্টিটি কার্ড’ গলায় ঝুলিয়ে আসা বাধ্যতামূলক। কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরও গলায় ‘আইডেন্টিটি কার্ড’ ঝোলানো বাধ্যতামূলক। কলেজের প্রবেশপথেও নজরদারিতে থাকেন নিরাপত্তারক্ষীরা। আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ‘ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব’, ‘স্মার্ট ক্লাস রুম’, ‘সেন্ট্রাল রিসার্চ ফেসিলিটি’-ও গড়ে উঠেছে কলেজে।
গত দেড় বছরে কলেজের সামগ্রিক ছবিটা বদলে গিয়েছে বলে মানছেন টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা চৈতালি সরেন। তাঁর কথায়, “রাজ্যের অনেক কলেজে যা নেই, তা এখন আমাদের প্রত্যন্ত এলাকার এই কলেজে রয়েছে। কলেজের সব জায়গাতে সিসি ক্যামেরা বসেছে। ইউনিয়ন রুমে সিসি ক্যামেরা বসানোয় আমরা কোনও আপত্তি করিনি। এতে তো ভালই হয়েছে।” অধ্যক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন বাকি পড়ুয়ারাও। ছাত্র সংসদের সদস্য বিমান সেন, সুপ্রিয় সরকার, অঞ্জন মাহাতোদের বক্তব্য, “কলেজে আমরা পড়াশোনা করতে এসেছি। ইউনিয়ন রুম হল ছাত্র প্রতিনিধিদের একটা মঞ্চ। তাই ক্যামেরা বসানোয় আপত্তি করার প্রশ্নই নেই।”