কোনও দলেরই প্রার্থী চূড়ান্ত নয়, ফাঁকা নির্বাচনী দফতর

পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভার একটিতেও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারল না শাসক-বিরোধী কোনও দলই। অথচ ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরই বুধবার থেকে ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন নির্বাচন দফতর খুলে দিয়েছে। মহকুমাশাসক রজনবীর সিংহ কপূর বলেন, “আমরা সব দিকে দিয়েই প্রস্তুত।” কিন্তু কোনও দলেরই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় মনোনয়ন পর্ব শুরুই হয়নি। বৃহস্পতিবার দিনভরই ফাঁকা ছিল মহকুমা নির্বাচনী দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০১:০৫
Share:

ঘাটালের মহকুমাশাসকের দফতর সুনসানই। —নিজস্ব চিত্র।

পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভার একটিতেও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারল না শাসক-বিরোধী কোনও দলই। অথচ ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরই বুধবার থেকে ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন নির্বাচন দফতর খুলে দিয়েছে। মহকুমাশাসক রজনবীর সিংহ কপূর বলেন, “আমরা সব দিকে দিয়েই প্রস্তুত।” কিন্তু কোনও দলেরই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় মনোনয়ন পর্ব শুরুই হয়নি। বৃহস্পতিবার দিনভরই ফাঁকা ছিল মহকুমা নির্বাচনী দফতর।

Advertisement

ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, খড়ার, রামজীবনপুর ও ক্ষীরপাই মহকুমার এই পাঁচটি পুরসভায় মোট আসন ৬০টি। প্রায় সব জায়গাতেই প্রায় এক মাস আগে থেকে প্রার্থী বাছাই শুরু করেও কোন্দলের জন্য প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি শসক তৃণমূল। দল সূত্রের খবর, পাঁচটি পুরসভার প্রায় ২০ শতাংশ ওয়ার্ডেই রয়েছে কোন্দলের জের। ওই সব ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে একাধিক নাম উঠে এসেছে। প্রার্থী না করলে নির্দল হিসাবেও লড়াই করার হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন অনেকে। ঘাটাল পুরসভায় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষিত না হলেও ১৭টি ওয়ার্ডের জন্য সম্ভাব্য নামগুলি নিয়ে জল্পনা চলছে। এ ক্ষেত্রে অন্তত ৮টি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একেবারেই মেনে নিতে পারেনি বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের বিরোধী গোষ্ঠী। দলীয় সূত্রের খবর, প্রার্থী তালিকা পরিবর্তনের জন্য বুধবার তৃণমূল রাজ্য সভা সুব্রত বক্সীর কাছে ওই গোষ্ঠীর তরফে দরবারও করা হয়েছে। ঘাটাল ছাড়া মহকুমার বাকি চারটি পুরসভাতেও শাসক শিবিরের ছবিটা একই। শেষমেশ রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে জট কাটে কিনা, সে দিকেই সকলে তাকিয়ে।

শাসক দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে কেন এত টানাপড়েন? তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রার্থী বাছাই নিয়ে গোড়া থেকেই দলের বিভিন্ন স্তরের কোন্দল একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কোন্দলের জেরে দলের কর্মীরা পর্যন্ত নেতৃত্বের উপর বিরক্ত। বহু ওয়ার্ডে আবার দেওয়াল ঘেরা থেকে ভোট প্রস্তুতিতেও বিশেষ গা ঘামাচ্ছেন না তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় অবশ্য গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কথা মানছেন না। তাঁর বক্তব্য, “পুরভোটের প্রার্থী তালিকা অনুমোদনের জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললেই তা প্রকাশ করা হবে।”

Advertisement

বিরোধী দলগুলির অবস্থাও তথৈবচ। সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস কেউই এখনও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা বলেন, “আজ, শুক্রবার মহকুমার পাঁচটি পুরসভাতেই দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করব। এ বারও ঘাটাল-সহ সব পুরসভায় একাধিক ওয়ার্ডেই দলের সমর্থিত নির্দল প্রার্থী থাকবে।” আর বিজেপি-র প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে কাল, শনিবার। দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভাতেই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। ভোটের প্রস্তুতিও শুরু করে দেওয়া হয়েছে। দেওয়াল ঘেরা থেকে পাড়া বৈঠক, সবই চলছে।”

তবে কংগ্রেসের অবস্থা বিরোধীদের মধ্যে সব থেকে করুণ। দল সূত্রের খবর, যা অবস্থা তাতে কতদিনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ঘাটালের কংগ্রেস নেতা জগন্নাথ গোস্বামী বলেন, “আমরা সব ওয়ার্ডেই প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে কবে তালিকা প্রকাশ করা যাবে বলতে পারছি না।” জগন্নাথবাবু আরও জানান, পরিস্থিতি বুঝে কিছু ওয়ার্ডে নির্দলদের সমর্থন করা হবে। বিশেষ করে দলের টিকিট না পেয়ে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কেউ নির্দল হিসেবে দাঁড়ালে স্থানীয় স্তরে তাঁকে সমর্থন করবে কংগ্রেস।

দলগুলির ভোট প্রস্তুতির এই অবস্থার মধ্যেই পুর-নাগরিকরা অপেক্ষায় রয়েছেন কবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে, কবেই বা শুরু হবে জোরকদমে প্রচার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement