Manipur Violence

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে উন্মত্ত জনতা, দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা! কার্ফুর মধ্যে উত্তেজনা, অশান্ত মণিপুর

শনিবার মণিপুরের দুই মন্ত্রী এবং তিন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। পরে তারা পৌঁছে যায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে। সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৮
Share:

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের বাড়ির সামনে শনিবার রাতে পৌঁছে গেল উন্মত্ত জনতা। জিরিবাম জেলায় ছ’জনের অপহরণ এবং খুনের বিচার চেয়ে সে রাজ্যে প্রতিবাদ চলছে। বিক্ষোভ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে শনিবার বিকেলেই রাজধানী ইম্ফলে কার্ফু জারি করে সরকার। তার পরেও বিক্ষোভ থামেনি। রাতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং তিন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এর পরেই উত্তেজিত জনতা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যায় বলে অভিযোগ। নিরাপত্তারক্ষীরা কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে কোনও রকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। রাতে সে সময়ে বাড়িতে বীরেন ছিলেন না বলেই খবর। তিনি রাতে আর বাড়িতে ফেরেননি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেই রয়েছেন।

Advertisement

শনিবার মণিপুরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সাপম রঞ্জন, উপভোক্তা বিষয়কমন্ত্রী এল সুসীন্দ্র সিংহ বিজেপি বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের জামাতা আরকে ইমো-সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের দাবি, জিরিবাম জেলায় ছ’জনকে খুন করায় অভিযুক্ত যাঁরা, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ইম্ফলে কার্ফু জারি করা হয়। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর-সহ মোট সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাগত একাধিক বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে। তবে রাজধানীতে উত্তেজনা রয়েছে।

রবিবার সকালে মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, ১৬ নভেম্বর রাতে উত্তেজিত জনতা মণিপুরের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়কের বাড়ি এবং সরকারি সম্পত্তিতে হামলা চালিয়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেল্‌সের জওয়ানদের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। রাতের ঘটনায় আট জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং বিষ্ণুপুর থেকে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একাধিক পিস্তল, কার্তুজ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকায় কার্ফু জারি রয়েছে। আপাতত দু’দিনের জন্য এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত কিছু দিন আগে। মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ১০ কুকি জঙ্গি। যদিও কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’। জিরিবাম জেলা থেকে একই পরিবারের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণের অভিযোগও উঠেছিল কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। ওই ছ’জন ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের। তাঁদের খোঁজ শুরু করেছিল নিরাপত্তাবাহিনী। শুক্রবার রাতে তিন জনের দেহ উদ্ধারের পর শনিবার উদ্ধার হয় আরও তিন জনের দেহ। দেহগুলি এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তবে অনেকেরই অভিযোগ, অপহৃত ছ’জনের দেহ নদীতে ভেসে এসেছে। দেহ উদ্ধারের পর থেকে উত্তেজনা বেড়েছে ইম্ফলে। বিচার চেয়ে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement